যুক্তরাষ্ট্রের ভালো-মন্দ বলাকে পছন্দ করে সরকার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনকে পররাষ্ট্রনীতির ব্যর্থতা হিসেবে মানতে রাজি নন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। একই সঙ্গে দেশটিকে ‘বন্ধু’ হিসেবে অভিহিত করে তিনি জানান, তাদের অনুরোধ করাকে পছন্দ করে সরকার।

মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘তারা বন্ধু বলে আমাদের উপদেশ দেয়। উপদেশ যেটি ভালো হয়, সেটি আমরা গ্রহণ করি। যেটি বাস্তবসম্মত নয়, সেটি গ্রহণ করি না। তারা সেটির জন্য রাগও করে না। আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো।’

তারা আমাদের বন্ধু এবং সে জন্য ভালো-মন্দ বলছে। আমরা এটি পছন্দ করি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের পাশের দেশ মিয়ানমার, সেখানে অ্যাথনিক গ্রুপদের ভোট দিতে দেয়নি। সেটি তো যুক্তরাষ্ট্র রক্ষা করেছে, অং সান সু চিকে বলেছে, এটি অবাধ নির্বাচন হয়েছে। সুতরাং এগুলো হলো সব ভাঁওতাবাজি।’

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্র চায় না এই সরকার ক্ষমতায় থাকুক। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এগুলো আমি জানি না।’

সরকার চাপ অনুভব করছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘চাপ নয়, তারা অনুরোধ করে। এটিকে আমরা চাপ মনে করবো কেন? আমরাও তাদের বলি, এটি করো, সেটি করো। তারা কি চাপ মনে করে? না। এটি একটি সিস্টেম।’

দুই দেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে না, বরং এটি মিডিয়ায় চলছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আপনারা তাদের ত্যক্ত করেন।’

এ কে মোমেন বলেন, ‘আপনারা অস্বস্তির কথা বলেছিলেন যে অমুক নিষেধাজ্ঞা, তমুক নিষেধাজ্ঞা হচ্ছে। এগুলো আপনারা (সাংবাদিক) বলেন, তারা আমাদের বলে না।’

ব্যর্থতা
গত পাঁচ বছরে মন্ত্রী থাকাকালীন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যর্থতা হিসেবে দেখেন কিনা জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত মধুর।’

সম্প্রতি বিদেশে একটি অনুষ্ঠানে কয়েকজন উচ্চ পর্যায়ের মার্কিন কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপকালে তারা বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা একটি প্রোগ্রাম আয়োজন করি যৌথভাবে।’

তিনি বলেন, ‘যেগুলো নিয়ে আপনি অস্বস্তির কথা বললেন, সেগুলোর কোনোটাই তারা তোলেনি। আমি মনে করি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমরা আরও ভালো ও দৃঢ় সম্পর্ক তৈরি করবো। সুতরাং আপনি যে অস্বস্তির কথা তুলেছেন, অস্বস্তি যেটা হচ্ছে তারা যেটা চায়, সেটা আমরা চাই। আমরা চাই দেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করবো, তারাও চায় দেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। এর সঙ্গে তারা যুক্ত করেছে অহিংসতা। এ বিষয়ে বলেছি যে আমরা এটির নিশ্চয়তা দিতে পারবো না।’

সহিংসতা বন্ধ করতে হলে সব দলের ইচ্ছা থাকতে হবে জানিয়ে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘তারা সেটি বোঝে। তাদের সঙ্গে আমাদের খুব ভালো সম্পর্ক আছে।’