কেন প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়াতে চায় বাংলাদেশ?

অর্থনৈতিক সক্ষমতা ও জটিল ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বৃদ্ধিতে আগ্রহী বাংলাদেশ। গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশ বিভিন্ন প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক সই করেছে। আরও কয়েকটি দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে। সামগ্রিকভাবে জাতীয় স্বার্থকে মাথায় রেখে নিজের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সাজাতে চায় সরকার।

এ বিষয়ে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার মো. শহীদুল হক বলেন, ‘একটি দেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তার প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে, এটিই স্বাভাবিক। আগে পুরোপুরি অর্থনৈতিক সক্ষমতা অর্জন এবং পরে প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধি, বিষয়টি এ ধরনের নয়। দুটোই একসঙ্গে হয়ে থাকে।’

উল্লেখ্য, চীন, ভারত, ফ্রান্স, জাপানসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা সমঝোতা রয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকটি দেশের সঙ্গে এটি নিয়ে আলোচনা চলছে।

প্রতিরক্ষার উদ্দেশ্য

বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিজেকে রক্ষা করার জন্য এবং অপরকে আক্রমণ করার উদ্দেশ্যে নয়। তবে প্রতিরক্ষা নীতির অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে কেউ শক্তি প্রয়োগ করলে বাংলাদেশ সেটি প্রতিহত করবে।

মো. শহীদুল হক বলেন, ‘আমাদের নীতি হচ্ছে—ডিফেন্সিভ ডিফেন্স (রক্ষার জন্য প্রতিরক্ষা)। দেশের সার্বভৌমত্ব, সম্পদ ও মানুষের মঙ্গলের জন্য, রক্ষার জন্য প্রতিরক্ষা নীতি এবং বাংলাদেশ সবসময় নিজেদের উন্নয়নের জন্য রক্ষার জন্য প্রতিরক্ষা নীতি অবলম্বন করেছে।’

কোন কোন দেশে আগ্রহ

অনেক আগে থেকেই চীনের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বজায় রেখেছে বাংলাদেশ। পরবর্তীতে ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা সমঝোতা স্মারক সই হয়। এরপর আরও কয়েকটি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিরক্ষা সমঝোতা করেছে।

সম্প্রতি উন্নত বিশ্বের ফ্রান্স ও জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিরক্ষা সমঝোতা স্মারক করেছে। এর আগে মধ্যপ্রাচ্যের কুয়েত, কাতার ও সৌদি আরবের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে বাংলাদেশের বাহিনীর সমঝোতা রয়েছে।

সম্পাদিত চুক্তির বাইরে ইতালি, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ডস, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, ব্রাজিলের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা চলছে।

এ বিষয়ে মো. শহীদুল হক বলেন, আমাদের নিজেদের প্রয়োজনেই প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াতে হবে। এখানে অন্য দেশগুলো তাদের প্রয়োজনে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে বা দেবে।

প্রতিরক্ষা সমঝোতাতে সাধারণত যেসব প্রশিক্ষণ, যৌথ মহড়া, তথ্য আদান-প্রদান, সক্ষমতা বৃদ্ধি, প্রতিনিধিদল আদান-প্রদানসহ অন্যান্য বিষয় সংযুক্ত থাকে।

এ বিষয়ে শহীদুল হক বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা কোনও বৃহৎ শক্তির জোটে যুক্ত না হচ্ছি, এ ধরনের সহযোগিতার কারণে সমস্যা হওয়ার তেমন কোনও কারণ নেই।

আরও পড়ুন- ভূ-রাজনীতিতে গুরুত্ব পাচ্ছে বাংলাদেশ: বাড়ছে নানা সমীকরণ