জুলাইয়ের মধ্যে জাতীয় সনদ তৈরি সম্ভব: অধ্যাপক আলী রীয়াজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় পর্বের আলোচনার মধ্য দিয়ে জুলাই মাসের মধ্যেই একটি জাতীয় সনদ তৈরি করা সম্ভব হবে।

সোমবার (২৬ মে) ঢাকায় সংসদ ভবনের এল. ডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাজের অগ্রগতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে অধ্যাপক আলী রীয়াজ এসব কথা বলেন। এ সময় কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে অধ্যাপক আলী রীয়াজ কমিশনের কাজের অগ্রগতি-বিষয়ক প্রতিবেদন পাঠ করেন। এতে উল্লেখ করা হয়, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন হতে সংস্কার প্রস্তাব সম্পর্কিত ছয়টি কমিশনের প্রতিবেদনের অনুলিপি গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাজনৈতিক দলগুলোকে পাঠানো হয়। গত ৫ মার্চ কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদন থেকে গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬ টি সুপারিশমালা রাজনৈতিক দল এবং জোটের কাছে মতামত প্রদানের জন্য পাঠানো হয়৷এর মধ্যে সংবিধান সংস্কার সংক্রান্ত সুপারিশ ছিল ৭০টি, নির্বাচন ব্যবস্থা সংক্রান্ত বিষয়ে ২৭টি, বিচার বিভাগ সংক্রান্ত ২৩টি, জনপ্রশাসন সংক্রান্ত ২৬টি এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের সুপারিশ ২০টি। পুলিশ সংস্কার কমিশনের সুপারিশ প্রশাসনিক স্বিদ্ধান্তের মাধ্যমে বাস্তবায়ন সম্ভব বলে, এই কমিশনের সুপারিশ স্প্রেডশিটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। 

কমিশনের প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়— দলগুলোর মতামত পাওয়ার পাশাপাশি গত ২০ মার্চ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রথম পর্যায়ের আলোচনা শুরু করে কমিশন এবং ধারাবাহিক আলোচনার মাধ্যমে গত ১৯মে পর্যন্ত ঐকমত্য কমিশন মোট ৩৩টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে ৪৫টি অধিবেশন করে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের আলোচনায় অনেক বিষয়ে যেমন ঐকমত্য হয়েছে এবং বেশকিছু বিষয়ে মতভিন্নতাও রয়েছে। প্রধান বিচারপতি নিয়োগ, স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য,  নারীদের জন্য ১০০ আসন, বিদ্যমান পাবলিক সার্ভিস কমিশন পুনর্গঠন করে ৮ সদস্য বিশিষ্ট তিনটি পাবলিক সার্ভিস গঠনসহ অনেকগুলো বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা হয়েছে বলে কমিশন হতে প্রদত্ত প্রতিবেদনে জানানো হয়। দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা শেষে মতপার্থক্যের বিষয়গুলো সম্পর্কে রাজনৈতিক দলগুলোর চূড়ান্ত অবস্থান জানাতে পারবে বলে আশা করে কমিশন।

মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা শুরু করতে চায় কমিশন এবং এই আলোচনা হবে বিষয়ভিত্তিক। তিনি বলেন, সব বিষয়ে ঐকমত্য হবে না, কিন্তু যেসব মৌলিক বিষয়ে এখনও মতভিন্নতা রয়েছে, সেসব বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার জন্যই দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা করবে কমিশন৷

উল্লেখ্য, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। আগামী ১৫ আগস্ট এই কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।