বাস্তবায়নযোগ্য বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে: পরিকল্পনা উপদেষ্টা

২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য একটি বাস্তবায়নযোগ্য ও মিতব্যয়ী বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।

মঙ্গলবার (৩ জুন) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, আমরা বাস্তবসম্মত বাজেট করেছি, যা বাস্তবে বাস্তবায়ন সম্ভব। প্রস্তাবিত বাজেটে ১১১৩টি প্রকল্পের মধ্যে নতুন প্রকল্প মাত্র ২০-৩০টি, সেগুলোও পূর্বে অনুমোদিত ‘সবুজ পাতার’ প্রকল্প, যেগুলোর বাস্তবায়ন শুরু হচ্ছে। অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প বাদ দেওয়া হয়েছে।

ঋণ ব্যবস্থাপনায় আগের চক্র থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, ঋণ নিয়ে ঋণ পরিশোধ করার দুষ্টচক্র থেকে বের হতে কিছুটা সময় লাগবে। তবে আমরা সেই দিকেই এগোচ্ছি। পুরো বাজেট প্রক্রিয়ায় অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প বর্জনের মাধ্যমে জঞ্জাল পরিষ্কারের চেষ্টা করেছি।

ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানান, এই বাজেটের আওতায় থাকা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের দায়িত্ব পরবর্তী সরকারের। তারা তাদের নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এগুলো বাস্তবায়ন করবে।

এর একদিন আগে, ২ জুন (সোমবার) অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেন। যা চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের (৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা) মূল বাজেটের চেয়ে ৭ হাজার কোটি টাকা কম। এটি দেশের ইতিহাসে প্রথমবার বাজেটের আকার হ্রাস পাওয়ার দৃষ্টান্ত।

প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা। বাজেট ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ৩.৬২ শতাংশ। ঘাটতি পূরণে বিদেশি ঋণ, ব্যাংক ঋণ এবং সঞ্চয়পত্রের ওপর নির্ভর করবে সরকার।

চলতি বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা অগ্রাধিকার পেয়েছে। এছাড়া সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সম্প্রসারণ, গ্রামীণ কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও অবকাঠামো উন্নয়নের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

এবার সংসদ না থাকায় বাজেট নিয়ে কোনও সংসদীয় আলোচনা হবে না। তবে জনগণের কাছ থেকে মতামত নিয়ে সেটিকে চূড়ান্ত করা হবে। পরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে এবং রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ জারি করে বাজেট কার্যকর করবেন। এটি আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে।