মানবাধিকার রক্ষা ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা রোধে যেসব সংস্কার

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখনও পর্যন্ত যেসব সংস্কার কাজ করেছে, তার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। বুধবার (২৫ জুন) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এই প্রতিবেদনটি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়। প্রতিবেদনে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত, রেলওয়ে, নির্বাচনি ব্যবস্থা, বিচার ব্যবস্থা, আর্থিক খাত, তথ্য, যোগাযোগ ও প্রযুক্তি খাত,  শিক্ষা, লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা রোধ, সামাজিক সুরক্ষা, শ্রম অধিকার, অভিবাসন, মানবাধিকার এবং তরুণ সমাজের জন্য করা সংস্কার কাজের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এসব কাজ গত ১৫ জুনের মধ্যে সম্পন্ন করা হয়।

মানবাধিকার প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের ৩০ আগস্ট সরকার জোরপূর্বক গুম প্রতিরোধে ‘আন্তর্জাতিক কনভেনশন ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন ফর দ্য প্রটেকশন অব অল পারসনস ফ্রম এনফোর্সড ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স (আইসিপিপিইডি)’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক কনভেনশনে সই করে। এতে করে ৭৬তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ পক্ষভুক্ত হয়। এই চুক্তি একটি অঙ্গীকার— জোরপূর্বক গুম প্রতিরোধ এবং অপরাধীদের জবাবদিহি করার।

এছাড়া গত মে মাসে সন্ত্রাসবিরোধী আইন সংশোধন করে অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। জারি করা অধ্যাদেশে সন্ত্রাসবিরোধী আইন সংশোধন করে সত্তার কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা, প্রয়োজনীয় বিষয় যুক্ত করা এবং অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার নিষিদ্ধ করার বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা রোধে সংস্কার কাজ হিসেবে বলা হয়েছে— নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সংশোধনের অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে গত মার্চে। এই সংশোধনীতে নারী ও শিশুদের সুরক্ষা বাড়াতে বেশ কিছু বিধান হালনাগাদ ও সম্প্রসারিত করা হয়েছে। ২০২৫ সালের সংশোধনীর মূল বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে রয়েছে— ধর্ষণের শাস্তি, ধর্ষণের সংজ্ঞা ও সম্মতির বয়স নির্ধারণ, আত্মহত্যায় প্ররোচনার শাস্তি, যৌন হয়রানির সংজ্ঞা ও শাস্তি, ধর্ষণের ফলে জন্ম নেওয়া শিশুদের অধিকার, তদন্তের সময়সীমা, পরিচয় গোপনীয়তা এবং গণমাধ্যমের বিধিনিষেধ, ধর্ষণের শিকার ব্যক্তিদের জন্য ক্ষতিপূরণের জন্য তহবিল করা।

যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন প্রনয়নের প্রক্রিয়া চলমান আছে। খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। ইউএন উইমেন ও সুশীল সমাজের সহায়তায়, বাংলাদেশ সরকার একটি বিস্তৃত যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা বিলের খসড়া তৈরি করেছে। হালনাগাদ করা খসড়ায় যৌন হয়রানির সুস্পষ্ট সংজ্ঞা, আনুষ্ঠানিক অভিযোগ এবং তদন্ত প্রক্রিয়া, প্রতিষ্ঠানে বাধ্যতামূলক অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটিসহ নানা বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

পারিবারিক সহিংসতা আইন সংশোধন চলমান আছে। পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন ২০১০ সংশোধন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।