বিদ্যুৎ খাতে দ্রুত সরবরাহ বিশেষ বিধান বাতিলের সঙ্গে সঙ্গে কিছু নীতিসহ বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে অন্তর্বর্তী সরকার। সংস্কারের অংশ হিসেবে মোট ছয়টি খাতে এই সংস্কারের কাজ চলছে। অন্তর্বর্তী সরকার এখনও পর্যন্ত যেসব সংস্কার কাজ করেছে, তার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
বুধবার (২৫ জুন) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এই প্রতিবেদনটি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়। প্রতিবেদনে বিদ্যুৎ খাতের জন্য করা সংস্কার কাজের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এসব কাজ গত ১৫ জুনের মধ্যে শেষ করা হয়।
বিদ্যুৎ খাতের সংস্কার প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে যেসব নীতির পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে এরমধ্যে—বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ বিশেষ আইন বিলুপ্ত: গতবছর ২৮ নভেম্বর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ বিলুপ্ত করা হয়েছে।
বিইআরসি আইনের সংশোধন বাতিল
গত বছরের ২৭ আগস্ট বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) আইন সংশোধন বাতিল করা হয়। এই আইনের মাধ্যমে এক সময় কমিশন বিদ্যুৎ গ্যাসের দাম নির্ধারণ করতে পারতো। পরে আওয়ামী লীগ সরকার সেই আইন পরিবর্তন করে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দাম নির্ধারণ শুরু করে। এই আইন সংশোধন বাতিলের ফলে বিইআরসি এখন আবার আগের মত স্বাধীনভাবে গণশুনানির মাধ্যমে বিদ্যুৎ ও গ্যাসে দাম নির্ধারণ করতে পারবে। এর ফলে বিষয়টি স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি আইএমইএফ-এর ঋণ শর্তের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়েছে।
ক্যাপাসিটি চার্জ পর্যালোচনা
সরকার বর্তমানে বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো অর্থাৎ ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রোডিউসার (আইপিপি) সঙ্গে হওয়া চুক্তি পর্যালোচনা করছে; যাতে করে ‘ক্যাপাসিটি চার্জের’ ধারা বাতিল করা যায়। এই চার্জের কারণে কোনও বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে সরকার বিদ্যুৎ না নিলে সেই কেন্দ্রকে ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হতো; যা সরকারের আর্থিক বোঝা বাড়াচ্ছিল।
নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতি
নবায়নযোগ্য জ্বালানি সম্প্রসারণে একটি নতুন নীতিমালা প্রণয়নাধীন রয়েছে। বর্তমান সরকার নবায়নযোগ্যা জ্বালানি থেকে প্রায় ৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন লক্ষ্য ঠিক করেছে।
মার্চেন্ট পাওয়ার পলিসি
২০২৪ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হওয়া এই নীতির মাধ্যমে বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালিকরা সরাসরি বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির কাছে বা গ্রাহকদের কাছে বিদ্যুৎ বিক্রি করতে পারবে। আগে তারা শুধুমাত্র বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কাছেই বিদ্যুৎ বিক্রি করতে পারতো।
আগ্রহপত্র (লেটার অব ইনটেন্ট টু পারচেজ রিনিউয়েবল এনার্জি) বাতিল
গতবছরের ১৮ নভেম্বর বর্তমান সরকার আগের সরকারের সময়ে দেওয়া নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পের ৩১টি আগ্রহপত্র বাতিল করেছে। যেগুলো অযাচিত প্রস্তাবের মাধ্যমে বিদ্যুৎ কেনার জন্য দেওয়া হয়েছিল।