চলে গেলেন পুলিশ সমন্বয়ক ফণি ভূষণ চৌধুরী

ফণি ভূষণ চৌধুরীবাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সদস্য, সাবেক সচিব ও পুলিশ সমন্বয়ক(আইজিপি সমতুল্য) ফণি ভূষণ চৌধুরী ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬২ বছর।
তার মরদেহ আগামীকাল রবিবার সকাল ১০টায় ঢাকেশ্বরী মন্দিরে নেওয়া হবে। সেখানে প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে দুপুর ১২টায় সর্বস্তরের পুলিশ সদস্যদের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য মরদেহটি রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে নেওয়া হবে। ওইদিন বিকেলে মরদেহ সৎকারের উদ্দেশে তাঁর গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক নেওয়া হবে। আগামী ২৮ মার্চ ছাতকে তাঁর মরদেহ সৎকার সম্পন্ন হবে।
ফণি ভূষণ চৌধুরী ১৯৮১ সালে সিভিল সার্ভিসে যোগদান করেন এবং সহকারী সচিব হিসেবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি ১৯৮২ বিসিএস (পুলিশ) ব্যাচের সদস্য হিসেবে ১৯৮৮ সালে সহকারী পুলিশ সুপার পদে যোগ দেন। বর্ণাঢ্য চাকরিজীবনে তিনি পুলিশ সুপার, পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের কমান্ডেন্ট, ডিআইজি এবং অতিরিক্ত আইজিপি পদে অত্যন্ত দক্ষতা ও সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি অতিরিক্ত আইজিপি পদে সিআইডি প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।  
ফণি ভূষণ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন মোজাম্বিক, ক্রোয়েশিয়া এবং বসনিয়া ও হার্জেগোভিনাসহ বিভিন্ন শান্তিরক্ষা মিশনে পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। ডিপার্টমেন্ট অব পিস কিপিং অপারেশনস এর অধীনে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে ট্রেনিং অ্যাডভাইজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
২০১০ সালে তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পুলিশ সমন্বয়ক নিযুক্ত হন। ২০১৩ সালে তিনি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ওই পদ থকে ২০১৪ সালের ১০ নভেম্বর অবসরোত্তর ছুটিতে যান। ২০১৪ সালের ২৪ নভেম্বর তিনি বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সদস্য হিসেবে যোগদান করেন। মৃত্যুর দিন পর্যন্ত তিনি ওই পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।
ফণি ভূষণ ১৯৫৪ সালের ১১ নভেম্বর সুনামগঞ্জের ছাতকে এক সম্ভ্রান্ত হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা নিবারণ চন্দ্র চৌধুরী একজন সরকারী কর্মকর্তা এবং মা হেলেন রাণী চৌধুরী স্কুল শিক্ষিকা ছিলেন। তিনি ১৯৭৫ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে সম্মান এবং ১৯৭৬ সালে একই বিষয়ে স্মতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে ১৯৮৪ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি লাভ করেন। শৈশবকাল থেকেই বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি রোটারি ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এশিয়া, ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা এবং আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ সফর করেছেন তিনি।

আইজিপির শোক:

ফণি ভূষণ চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক। এক শোকবাণীতে তিনি বলেন, ফণি ভূষণ চৌধুরীর মৃত্যুতে বাংলাদেশ একজন দক্ষ কর্মকর্তাকে হারালো। পুলিশ বাহিনী হারালো তাদের অতি প্রিয় একজন অভিভাবক।

আইজিপি ফণি ভূষণ চৌধুরীর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত  পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

/এমআর/এআরআর/এইচকে/