আরব আমিরাতের শ্রমবাজার এখনও সংকুচিত

আরব আমিরাতের শ্রমবাজার এখনও সংকোচিতপ্রতিদিন ৬০০ জনকে ভিসা দিতে সক্ষম এমন একটি ভিসা ও কনসুলার অফিস গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে ঢাকায় খুলেছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত। তখন সবাই ধারণা করেছিল তিন বছর পর আবার নতুন করে বড় আকারে কর্মসংস্থান সুযোগ সৃষ্টি হবে মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ এ দেশটিতে। সে হিসাবে প্রতি সপ্তাহে ৩ হাজার এবং প্রতিমাসে ১২ হাজার ভিসা দেবার ক্ষমতা থাকলেও এ বছরের জানুয়ারি-মার্চ মেয়াদে আরব আমিরাতে লোক পাঠানোর চিত্র অত্যন্ত করুণ। এ তিন মাসে লোক গেছে মাত্র ২ হাজার ১৭৩ জন। তবে ২০১৫ সালের প্রথম তিন মাসে গিয়েছিল ৭ হাজার ১৬৬ জন। ২০১২ সালের আগস্ট থেকে বাংলাদেশের এই শ্রমবাজার সংকোচিত করে সংযুক্ত আরব আমিরাত।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, তারা (সংযুক্ত আরব আমিরাত) যে পরিসরে বাংলাদেশে ভিসা অফিস খুলেছে তাতে আমরা ভেবেছিলাম এবার তারা বড় আকারে লোক নেবে কিন্তু গত তিন মাসের চিত্র হতাশাজনক। মধ্যপ্রাচ্যে লোক নেওয়ার বিষয়টি অনেকটা তাদের মর্জির ওপর নির্ভর করে।
এর কারণ সম্পর্কে ওই কর্মকর্তা বলেন, নিরাপত্তা ও বন্দি বিনিময় সংক্রান্ত বিষয়ে দুটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ ও আরব আমিরাত। এর ফলে বাংলাদেশের ওপর আমিরাত সরকারের ভরসা বেড়ে গেলেও শ্রমবাজার আরও উন্মুক্ত করতে তারা এখনও রাজি হয়নি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরেক কর্মকর্তা বলেন, আমিরাতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তির তীব্র সংকটের আরেকটি কারণ শ্রমবাজার অবাধ না হওয়া। এছাড়া এক হাজারের বেশি বাংলাদেশি বিভিন্ন কারণে দেশটিতে অভিযুক্ত আসামি এবং আমিরাতের জেলখানায় বাংলাদেশি কয়েদির সংখ্যা একক দেশ হিসেবে সর্বোচ্চ।

তিনি জানান, কয়েদিদের মধ্যে ১৯ জন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এবং ১০৪ জন যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামি। তারা খুন, ডাকাতি, চোরাকারবারী, জুয়ার আসর বসানো থেকে শুরু করে মাদক ও পতিতা ব্যবসায়ের সঙ্গে জড়িত। আমিরাতে ৯০ লাখ লোক থাকে এবং এর মধ্যে স্থানীয়দের সংখ্যা মাত্র নয় লাখ আর বাকিরা বিভিন্ন দেশের লোক।

আমিরাতে বর্তমানে বাংলাদেশিদের সংখ্যা ১০ লাখের উপরে জানিয়ে এই কর্মকর্তা আরও বলেন, স্থানীয়রা সংখ্যায় অত্যন্ত কম হওয়ার কারণে নিরাপত্তা ও বেআইনি কার্যকলাপ সম্পর্কে তারা অত্যন্ত স্পর্শকাতর। প্রায় প্রতিদিনই আমিরাতের সংবাদপত্রগুলো বাংলাদেশিদের অপরাধ সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশ করে থাকে।

/এমও /এএইচ/