‘লাভিং পিপল’





বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে বিদেশিরা

নতুন বছরকে বরণ করে নিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ আয়োজিত মঙ্গল শোভাযাত্রা ঢাকাবাসীর প্রাণের উৎসবে পরিণত হয়েছে অনেক আগে থেকেই।এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। সব বয়সের নারী-পুরুষ-শিশু শোভাযাত্রায় অংশ নিতে সেই ভোর থেকে উপস্থিত হতে থাকেন চারুকলায়।তবে বাঙালির পাশাপাশি গত কয়েকবছর ধরে এ শোভাযাত্রায় অংশ নিতে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশে অবস্থানরত বিশ্বের অন্যান্য দেশের নাগরিকদেরও।
নতুন বছরের প্রথমদিনে চারুকলা, শাহবাগ, টিএসসি ঘুরে দেখা মিললো এমন বেশ কয়েকজনের সঙ্গে, যারা তাদের বাঙালি বন্ধুদের সঙ্গে চষে বেড়াচ্ছেন পুরো এলাকা। প্রতিদিনকার পোশাক ছেড়ে তারা বেছে নেন শাড়ি-পাঞ্জাবি। হাতে চুড়ি, কপালে টিপ আর মুখের একপাশে রং দিয়ে লেখা- শুভ নববর্ষ।বর্ষবরণে পিছিয়ে নেই বিদেশিরাও
নেদারল্যান্ড থেকে এসেছেন জেলিসা ও বিঅর্ন। ডাচ অ্যাম্বাসিতে ইন্টার্নশিপ করতে আসা জেলিসা পুরোদস্তুর বাঙালি সাজে এসেছেন। সুতির শাড়ি, কপালে টিপ, কানে ঝোলানো লম্বা দুল আর পায়ে স্লিপার চাপিয়ে ঘুড়ে বেড়াচ্ছেন দেদারসে। প্রথম দর্শনে তাকে দেখলে বোঝার উপায় নেই তিনি বাঙালি নন।
তবে বাঙালি এ সাজকে দারুণ উপভোগ করছেন জানিয়ে জেলিসা বলেন, বাংলাদেশে তিনি এই প্রথমবার এসেছেন। আর নতুন বছরকে বরণ করে নিতে বাঙালির এই যে উন্মাদনা-এটাকে ‘ইটস অ্যামাজিং’ বলে মুগ্ধ দৃষ্টিতে চারদিকে চোখ বোলালেন তিনি। তার চোখেমুখেই খেলে যাচ্ছিলো আনন্দের ছটা।লিথুয়ানিয়ার নাগরিক গোমেজ
শাড়ি পরতে কেমন লেগেছে জানতে চাইলে হাসিটা আরও বিস্তৃত হলো জেলিসার। বললেন, এটা খুবই ‘কমফোর্টেবল’, খুব মজা পাচ্ছি। কিন্তু সামলাতে একটু সমস্যা হওয়ার কথা হলেও বললেন, ‘আই ক্যান ম্যানেজ।’
ইউরোপের দেশ লিথুয়ানিয়া থেকে আসা গোমেজ বাংলাদেশে রয়েছেন প্রায় আড়াই বছরের মতো। একটু একটু বাংলাও বলতে পারেন। সোনালী, মেরুন অ্যাম্ব্রয়ডারি করা ঘিয়ে রংয়ের পাঞ্জাবিতে তাকে দূর থেকে আর দশটা বাঙালি যুবকের মতোই লাগে। হাতে একটি টকটকে লাল গোলাপ নিয়ে ঘুড়ে বেড়াচ্ছিলেন, মুখের বাঁ পাশে নীল-লাল-সবুজে বাংলায় লেখা ‘শুভ নববর্ষ ১৪২৩।’

বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে বিদেশিরা

ভাঙা বাংলাতেই কথা বললেন গোমেজ। জানালেন, বাংলাদেশে আসার পর থেকেই এদিনটিতে খুব ভোরে চলে আসেন এখানে। ভালো লাগে এখানে এসে, চারিদিকে এতো মানুষ, সবাই হাসছে, কথা বলছে –এটা অন্যরকম একটা দৃশ্য যেটা দেখেও খুব ভালো লাগে। হাতের লাল গোলাপটা কার জন্যে জানতে চাইলে গোমেজ বলেন, এটা বাংলাদেশের মানুষের জন্য, বাংলাদেশে না এলে বোঝা যেত না এখানকার মানুষ কতোটা ভালো, তারা কতো অতিথিপরায়ণ, তারা কতোটা লাভিং পিপল।

আরও পড়ুন- 

বৈশাখী সাজে শুভেচ্ছা জানালেন বার্নিকাট

অন্তর মম বিকশিত করো, অন্তরতর হে...





/জেএ/এফএস/ আপ- এপিএইচ/