পুলিশের কাছে ‘ভাড়াটিয়া/বাড়িওয়ালা/ফ্ল্যাট মালিক নিবন্ধন’ ফরমে বাড়িওয়ালাদের পরিবারের বিবরণসহ বেশকিছু বিষয় নিয়ে বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়ারা সমস্যায় পড়েছেন। শুরুতে থানায় তথ্য দিতে ভয় পেলেও উচ্চ আদালতের আদেশের পর সেটা দিতে গিয়ে বিপত্তিতে পড়েছেন তারা।
এদিকে,ভাড়াটিয়াদের ফরমে সর্বোচ্চ ৩ জন সদস্যের নাম দেওয়া যাবে। আর আলাদা আলাদা ফরমে গৃহকর্মীর নামধামের জায়গা থাকলেও মায়ের নাম লেখার কোনও জায়গা নেই। মোট ১৫টি বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করার জন্য ফরম তৈরি করা হলেও সরকারি সব কাগজে বাবার পাশাপাশি মায়ের নাম উল্লেখের নির্দেশ থাকার পরও ফরমে সেই জায়গা রাখা হয়নি।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন সায়মা হক। তিনি এখনও ফরম জমা দেননি।তিনি বলেন,গৃহস্থালি কাজে সহায়তা করে যে তার ছবিসহ আমি আমার ফরম জমা কেন দেবো? সে কাল থেকেই কাজ নাও করতে পারে। সে ক্ষেত্রে সে যে আর আমার বাসায় কাজ করে না সে তথ্য কি আমি থানায় গিয়ে দিয়ে আসবো? আমাদের এসব প্রশ্নের উত্তর কেন দিতে হবে?
তথ্য ফরম অনুযায়ী, বাসার বিবরণ ও ঠিকানা, পরিবার প্রধানের নাম ও স্থায়ী ঠিকানা (টেলিফোন নম্বরসহ), জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, পরিবারের অন্য সদস্যদের নাম ও পরিবার প্রধানের সঙ্গে সম্পর্কসহ ভাড়াটিয়া পরিবার প্রধানকে
আরও পড়ুন:
শনাক্তকারী দুই ব্যক্তির নাম ও তাদের ঠিকানা (ফোন নম্বরসহ) এবং ভাড়াটিয়া পরিবার প্রধানদের পূর্ণ স্বাক্ষর দেওয়া লাগলেও বাড়িওয়ালাদের জন্য নির্ধারিত ফরমে তাদের বাসার সদস্য পরিচিতিও লাগবে না।
ফরমে এ ধরনের অসঙ্গতির কারণ জানতে চাইলে প্রশাসন বলছে,এটা অনিচ্ছাকৃত।পরবর্তীতে ঠিক করে ফেলা হবে।আবারও তথ্য হালনাগাদ কিভাবে হবে জানতে চাইলে তারা কোনও কথা বলতে চাননি।
রাজধানীতে অপরাধী শনাক্তের কাজ সহজ করতে গত চার মাস আগে থেকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়াদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করে। এ নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হলেও আশানুরূপ তথ্য পাওয়া যায়নি।সম্প্রতি নগরীর দু’টি বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধার হওয়ার পর তাদের সম্পর্কে তথ্য না থাকার বিষয়ে সমালোচনার মুখে পড়ে ডিএমপি। এর পরপরই তথ্যগুলো থানায় দিতে সময় বেঁধে দেয় ডিএমপি। আপাতত যেভাবে ফরম আছে সেভাবেই তথ্য নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়।
আরও পড়ুন:
ডিএমপির একজন কর্মকর্তা বলেন,বিভিন্ন সময় পুলিশের হাতে গ্রেফতার অপরাধীরা জিজ্ঞাসাবাদে জানান, তারা সন্ত্রাসী বা জঙ্গি কর্মকাণ্ডের জন্য সুবিধা অনুযায়ী ছদ্মনামে বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন। এক বাসা থেকে আরেক বাসা পরিবর্তনের কারণে ঠিকভাবে তাদের খোঁজ রাখা সম্ভব হয় না। ফলে আমরা একটি ডাটাবেজ তৈরি করতে চাই। কেবল ভাড়াটিয়ারাই এধরনের কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত এমনটা মনে করেন কিনা প্রশ্নে তিনি বলেন, আটক ব্যক্তিদের বক্তব্যে সেটাই প্রাধান্য পাচ্ছে।
ফরমের এই জটিলতা কেন হচ্ছে এবং নগরবাসীকে প্রশ্নগুলোর উত্তর কে দিবে জানতে চাইলে উপ-কমিশনার জনসংযোগ বিভাগ (ডিএমপি) মারুফ হোসেন সরকার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,এবারই প্রথম এটা করা হচ্ছে। যে ভুলত্রুটিগুলো নজরে আসবে সেগুলো পরে শুধরে নেওয়া যাবে। মূলত: ভাড়াটিয়ারা ছদ্মনামে বাসা ভাড়া নেয় বলে ফরমে ভাড়াটিয়াদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বেশি।
/এমএসএম/আপ- এপিএইচ/