যেখানে ছেলে-মেয়েরা এককথা বলে না

গ্রামের নাম উবাং। নাইজেরিয়ার এ গ্রামের লোকজন এখনও ধরে আছে বাপ-দাদার অতি প্রাচীন এক সংস্কৃতি। যে সংস্কৃতিতে নারী ও পুরুষকে ধরা হয় একেবারে আলাদা দুটি সত্তা। সেই ‘পার্থক্য’টা টিকিয়ে রাখতে আদিকাল থেকেই এ গ্রামে চালু আছে দুটো ভাষা। এক ভাষায় কথা বলবে পুরুষ, আরেক ভাষায় নারী!

একজন আরেকজনের ভাষা বুঝলেও বলতে পারবে না। যেমন, গাছ বোঝাতে উবাং গ্রামের পুরুষরা বলবেন ‘কিচি, নারীরা বলবে ‘ওকওয়েং’। একইভাবে পোশাক বোঝাতে পুরুষরা বলবেন ‘ইংকি’, আর নারীরা বলবেন ‘আরিগা।’ মোটকথা, একটি শব্দের সঙ্গে আরেকটির উচ্চারণগত মিলও নেই।

কেন এমন অদ্ভুত নিয়ম? কেনই বা নারী-পুরুষকে একই বস্তুর দুটি ভিন্ন শব্দ শিখতে হবে? এ নিয়ে নাইজেরিয়ান নৃবিজ্ঞানী চি চি বিবিসিকে জানালেন দুটো কারণ। একটি হলো আগাগোড়া মিথ। স্থানীয়রা বিশ্বাস করেন, সৃষ্টিকর্তা প্রথম যে নারী-পুরুষ তৈরি করেন তারা দুজনই ছিলেন উবাং সম্প্রদায়ের। এরপর তিনি দুজনের জন্য ভিন্ন ভিন্ন ভাষা ঠিক করে দেন।

চিচির আরেকটি ব্যাখ্যা হলো, আফ্রিকার কিছু আদিবাসীর মধ্যে প্রচলিত ‘ডুয়েল-সেক্স কালচার’। যে সংস্কৃতিতে নারী-পুরুষে বৈষম্য না থাকলেও দুই লিঙ্গের বাসিন্দারা নিজেদের জন্য আলাদা দুটি জগৎ তৈরি করে রাখে।

শিশুরা কী করে? জানা গেলো, ১০ বছর বয়স পর্যন্ত উবাংয়ের শিশুরা দুটো ভাষাই শেখে। এরপর যখন তারা নিজেদের লিঙ্গ পরিচয়টাকে বড় করে ভাবতে শুরু করে, তখনই বেছে নেয় যার যার শব্দভান্ডার।

 

সূত্র: বিবিসি