বাজেট দিতেই এর সবচেয়ে বেশি সমালোচনা করে বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপি, বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। তবে এই সমালোচনার ভাষা বরাবরই গতানুগতিক। তাদের আট বছরের প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বাজেটের পর প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে ‘বাস্তবসম্মত নয়’, ‘কালো টাকা সাদা করার সুযোগের সমালোচনা’, ‘ঋণ করে ঘি খাওয়া’, ‘উচ্চাভিলাষী বাজেট’ শব্দগুলোর ব্যবহার রয়েছে। আর বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি দিনের পর দিন কেবল ‘সাম্রাজ্যবাদ ও লুটেরা ধনিক শ্রেণির স্বার্থরক্ষার বাজেট’ বলে লিখিত প্রতিক্রিয়ার বিবৃতি দিয়ে গেছে।
মহাজোটের প্রথম বাজেটকে অবাস্তব বলে উল্লেখ করেছিল বিরোধী দল। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেছিলেন, এতে করের বোঝা ও দ্রব্যমূল্য বাড়বে।
‘অবৈধ’ সরকারের বাজেট নিয়ে মাথাব্যাথা নেই উল্লেখ করলেও ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জন্য জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত দেশের সবচেয়ে বৃহৎ বাজেটকে ‘ঋণ করে ঘি খাওয়া’ হিসেবে অভিহিত করে বিএনপি। বাজেট বাস্তবসম্মত নয়- মন্তব্য করে দলটি পরামর্শ দিয়েছিল, বাজেট বাস্তবতার নিরিখে হওয়া প্রয়োজন।
বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখার সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বাজেটে কালো টাকার অবকাশ থাকতে পারে না।
বিএনপি এ সরকারের শুরুতে সরকার ‘অবৈধ’ হওয়ায় বাজেট দেওয়ার অধিকার নেই জানালেও প্রতিবারের মতোই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। বিএনপি তাদের প্রতিক্রিয়ায় জানায়, এই বিলাসী বাজেট বাস্তবায়নই হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ। এক্ষেত্রে সরকার বিদেশি দাতাগোষ্ঠী, ব্যাংক বা দেশের অভ্যন্তরে ব্যাংক থেকে সহায়তা চাইতে পারে। কিন্তু এর মূল চাপ পড়ে মূলত সাধারণ মানুষের ওপর। এ কারণে বাজেট স্বপ্নবিলাসী হলেও মানুষের কাছে দুঃস্বপ্নের মতো।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ২০১৫ সালে বাজেট প্রস্তাবনাকে সাম্রাজ্যবাদ ও লুটেরা ধনিক শ্রেণির স্বার্থরক্ষার একটি গতানুগতিক দলিল হিসেবে আখ্যায়িত করার পাশাপাশি তা প্রত্যাখান করে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটকে ‘সাম্রাজ্যবাদ ও লুটেরা ধনিক শ্রেণির স্বার্থরক্ষার দলিল’ উল্লেখ করে তা প্রত্যাখ্যান করে। এর আগের বছর বাজেট প্রস্তাবের পর সেই একই ভাষা ব্যবহার করে দলটি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে কালো টাকার মালিক এবং লুটেরা ধনীদের স্বার্থরক্ষাকারী ও গণবিরোধী বাজেটের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে। ২০১০ সালে প্রস্তাবিত বাজেটকে নীতি ও দর্শনের দিক থেকে গতানুগতিক এবং ধনিকশ্রেণির স্বার্থরক্ষার দলিল হিসেবে অভিহিত করে বিবৃতি দেয় দলটি।
বৃহস্পতিবার (২জুন) বাজেট ঘোষণা শুরুর পরপরই সিপিবি তাদের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় একইকথা বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছে। এতে বলা আছে, এ বাজেট গতানুগতিক এবং সাম্রাজ্যবাদ ও লুটেরা ধনিক শ্রেণির স্বার্থরক্ষার একটি গণবিরোধী দলিল।
আরও পড়ুন:
বরাদ্দের বিচারে শীর্ষ ও নিম্ন দশ
বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ সাড়ে ৬শ’ কোটি টাকা
ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে প্রয়োজনে ব্যবস্থা
/ইউআই/ এপিএইচ/