পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করতে গিয়েছিলাম: এসপি বাবুল আক্তার

বাবুল আক্তারস্ত্রী হত্যা মামলায় রাতভর পুলিশ হেফাজতে থাকার পর পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তার বলেছেন, পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করতে তাকে ডেকে নেওয়া হয়েছিল। শনিবার বিকালে তিনি মুঠোফোনে বাংলা ট্রিবিউনের কাছে এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘মামলার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার জন্য আমাকে ডেকে নেওয়া হয়েছিল। আমাকে আটক বা গ্রেফতার কোনও কিছুই করা হয়নি।’
‘মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে’ আর কোনও কথা বলতে চাননি তিনি। তবে কোথায় এই আলোচনা হয়েছে তা তিনি জানাতে রাজী হননি।
শনিবার বিকাল ৪ টার দিকে তাকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাবুল আক্তারকে নেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন।
তবে বিকালে তিনি মুঠোফোনে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কয়েকজন আসামি গ্রেফতার হয়েছিল, তাদের শনাক্তের জন্য তাকে নেওয়া হয়েছিল।’
শুক্রবার রাতে বাবুল আক্তারকে তার শ্বশুরের বনশ্রীর বাসা থেকে আইজিপি কথা বলবেন বলে ডেকে নিয়ে আসে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) আনোয়ার হোসেন ও খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঈনুল হোসেন।
শনিবার সকালে বাবুল আক্তারের শ্বশুর সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে তাকে (বাবুল আক্তার) নিয়ে যাওয়ার কথা জানান।

বাবুল আক্তারের শ্বশুর বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার আনোয়ার হোসেন ও খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঈনুল হোসেন তাকে এসে নিয়ে যান।’

শ্বশুর বলেন, ‘আইজিপি স্যার যেতে বলেছেন এটা বলেই নিয়ে গেল। তবে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে তা কিছু জানান নি। এরপর আমরা যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি তবে পাইনি।’

মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘শুক্রবার সন্ধ্যায় অফিসার মেসে ২৪ তম বিসিএস পুলিশ কর্মকর্তারা আমার মেয়েকে নিয়ে শোকসভা ও ইফতার পার্টি আয়োজন করেন। সেখানে ছিল বাবুল আক্তার। সেখান থেকে রাত ১০ টার দিকে রমনা কমপ্লেক্স আসেন। তার দুই সন্তান তার সঙ্গেই ছিল। আইজিপির সঙ্গে দেখা করবে বলে রমনা কমপ্লেক্সের একটি পরিচিত বাসায় তাদের রেখে দেখা করতে যায়। এরপর আনুমানিক রাত সাড়ে ১২ টার দিকে তিনি সেখান থেকে বাচ্চাদের নিয়ে বাসায় আসেন। এর কিছুক্ষণ পরই পুলিশ আসে। জামা-কাপড় পরিবর্তনেরও সুযোগ পায়নি।’

তিনি বলেন, ‘এর আগে পরশু দিন ইফতারের আগে আইজিপি স্যারের বাসায় ইফতারের দাওয়াত ছিল বলে বাবুলকে ডেকে নিয়েছিল পুলিশ। আবার ফিরেও আসে। তবে এবার ১৫ মিনিটের কথা বলে নিয়ে যাওয়া হয়। অনেক সময় হলেও আর ফিরে আসেনি। এতেই আমাদের সন্দেহ হয়। যারা নিয়েছিল তারা কেউ ফোনও ধরছে না। আমরা জানি না কোথায় আছে।’

এঘটনার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল খান ঢাকা ক্লাবে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের জানান, ‘তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে নেওয়া হয়েছে। দ্রুত আপনারা সব জানতে পারবেন।’

গত ৫ জুন চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড় পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে গুল করে ও কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তার বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। চট্টগ্রামে জঙ্গি দমনে বাবুল আক্তার দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে সুনাম অর্জন করেন।

/এআরআর/ এপিএইচ/

আরও পড়ুন:

বাসায় ফিরেছেন এসপি বাবুল আক্তার

বাবুল আক্তারকে নিয়ে যা বললেন তার শ্বশুর

বাবুল আক্তারকে আসামিদের মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী