বছরের শুরু থেকে থেকে এ পর্যন্ত শত কোটি টাকারও বেশি মূল্যের ৩৪টি বিলাসবহুল গাড়ি উদ্ধার করেছেন শুল্ক গোয়েন্দারা। এগুলোর মধ্যে বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ বেঞ্জ ও পোরশে, জাগুয়ার, ওডি আর, নিশান জেড এক্সসহ বিভিন্ন নামি-দামি ব্র্যান্ডের গাড়ি রয়েছে। কিন্তু শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা এসব গাড়ির মালিক কারা, তাদের ধরতে পারেনি গোয়েন্দারা ও তদন্ত অধিদফতর। তবে, সংশ্লিষ্টরা জানান, এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী এসব গাড়ি বেচা-কেনার সঙ্গে জড়িত। কিন্তু সুনির্দিষ্ট তথ্য না থাকায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছে না শুল্ক কর্তৃপক্ষ।
শুল্ক গোয়েন্দারা জানান, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন উপায়ে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে দেশে নিয়ে আসা হয় বেশ কিছু গাড়ি। এরমধ্যে শতাধিক গাড়ি অবৈধ উপায়ে অনেকে ব্যবহার করছেন। কারনেট সুবিধার অপব্যবহার করে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে এসব গাড়ি বিক্রিতেও একটি চক্র জড়িত রয়েছে। তারাই এগুলো কমিশনের ভিত্তিতে কেনা-বেচায় সহযোগিতা করে থাকে। কোটি কোটি টাকা মূল্যের এসব গাড়ি ও গাড়ির মালিক এবং ওই দালাল চক্রের সদস্যদের আটক করতে কাজ করছেন শুল্ক গোয়েন্দারা। বিদেশি পর্যটকদের জন্য শুল্কমুক্ত সুবিধায় বিদেশ থেকে গাড়ি আনার যে সুযোগ রয়েছে, সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই এসব বিলাসবহুল গাড়ি কেনা-বেচা হচ্ছে। অথচ নিয়মানুযায়ী এসব গাড়ি পর্যটকদের জন্য ‘কার্নেট ডি প্যাসেজ’ সুবিধায় বাংলাদেশে এনে আবার ফিরে যাওয়ার সময় ফেরত নিয়ে যাওয়ার কথা।
গত এক মাসে সিলেট এলাকা থেকে একই উপায়ে নিয়ে আসা তিনটি বিলাসবহুল গাড়ি আটক করেন শুল্ক গোয়েন্দারা। গাড়িগুলোর মধ্যে ‘জাগুয়ার এস টাইপ’, ‘নিশান ৩০০-জেড এক্স’ এবং ‘মিতসুবিশি’ গাড়ি রয়েছে। এর আগেও মার্সিডিঞ্জ বেঞ্জসহ আরও চারটি গাড়ি উদ্ধার করা হয়েছে সিলেট এলাকা থেকে। গত ৩১ আগস্ট রাজধানীর কাকরাইলে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের অফিসের পাশে রাস্তায় লাল রংয়ের এসএলকে ২৩০ মডেলের মার্সিডিঞ্জ বেঞ্জ গাড়ি ফেলে যান এক মালিক। পরে গাড়িটি উদ্ধার করেন শুল্ক গোয়েন্দারা।
শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ‘কার্নেট ডি প্যাসেঞ্জার সুবিধায় নিয়ে আসা শতাধিক দামি বিলাসবহুল গাড়ি দেশের রাস্তায় চলাচল করছে বলে তাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে। সেই গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযান চালাচ্ছেন তারা। এ পর্যন্ত তারা ৩৪টি গাড়ি উদ্ধার করতে পেরেছেন। অন্যগুলো উদ্ধারে অভিযান চলছে। সবগুলো গাড়ি ও গাড়ির মালিকদের বিরুদ্ধে শুল্ক ও মানি লন্ডারিং আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।’
মইনুল খান আরও বলেন, ‘শুল্ক ফাঁকি দিয়ে ব্যবহার করা বিলাসবহুল গাড়ির বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান জোরদার করার পর অনেকেই এসব বিলাসবহুল গাড়ি লুকিয়ে রেখেছেন। অনেক মালিক গা ঢাকা দিয়েছেন। লুকিয়ে ফেলা গাড়ি উদ্ধার ও মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন তারা। যারা এসব গাড়ি কেনা-বেচার সঙ্গে জড়িত তাদেরও ধরার চেষ্টা চলছে।’
/এমএনএইচ/আপ- এপিএইচ/
আরও পড়ুন:
শর্ত ভেঙে বিলাসবহুল গাড়ি ব্যবহার, পাঁচ এয়ারলাইন্স শনাক্ত