ঝাড়ুদার সুমনের ইনজেকশনে বিপ্লবের মৃত্যু হয়নি: ঢামেক পরিচালক

বিপ্লব মণ্ডল

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মারা যাওয়া বিপ্লব মণ্ডলকে কোনও ইনজেকশন দেননি ঝাড়ুদার (ওয়ার্ড বয়) সুমন। এছাড়া ইনজেকশনের কারণে তার মৃত্যু হয়নি বলে জানিয়েছেন ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। মঙ্গলবার হাসপাতালের সভাকক্ষে বিপ্লব মণ্ডলের মৃত্যুর তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশকালে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে ডাক্তার সেজে চিকিৎসাধীন বিপ্লব মণ্ডলকে ভুল ইনজেকশন দিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠে ঝাড়ুদার সুমনের বিরুদ্ধে।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর শুক্রবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিপ্লবের মৃত্যু হয়। ঝাড়ুদারের ভুল চিকিৎসার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে অভিযোগ উঠলে ২৪ সেপ্টেম্বর  চার সদস্যসের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর আজ  মঙ্গলবার ঢামেকের পরিচালক তা সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, মৃত বিপ্লব মণ্ডলের শরীরে কোনও ইনজেকশন পুশ করা হয়নি। সুমন ইনজেকশন পুশ করেছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে তা ভিত্তিহীন।প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রোগীর মৃত্যুর কারণ পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট হাতে আসার পর জানা যাবে।

ঢামেক পরিচালক বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, মৃত বিপ্লব মণ্ডল মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত ছিলেন। কয়েকদিন চিকিৎসা নেওয়ার পর তিনি দৃশ্যত সুস্থ হতে শুরু করেন। কিন্তু  আসলে তিনি সুস্থ হয়ে উঠেননি। সাময়িক ভালো লাগায় রোগী নিজেকে সুস্থ মনে করেছেন। ওইদিন কিছুক্ষণ হাটাচলা করার পর তার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।স্বজনরা ডাক্তারের কাছে গেলে শ্বাসকষ্টের জন্য একটা ইনজেকশন লিখে দেওয়া হয়। যা মৃতের স্বজনরাই কিনে নিয়ে আসেন। এরপর একজন নার্স নেবুলাইজার মেশিনে পুশ করেন।তখন ঝাড়ুদার সুমনকে শুধুমাত্র অক্সিজেনের মাস্কটা ধরে রাখতে বলা হয়। অবস্থা খারাপ হলে বিপ্লবের মৃত্যু হয়। ফলে ভুল বোঝাবুঝির কারণে স্বজন ও সাধারণ জনগণের জনরোষের শিকার হয় সুমন। পরে তাকে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়।’

ইনজেকশনের কারণে মৃত্যু হয়নি জানিয়ে ঢামেক পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, ‘মেডিক্যালের ভাষায় একটা পর্যায় আছে লুজিং ইন্টারবেল। খারাপ ও ভাল অবস্থার মাঝামাঝি। বিপ্লব কিছুটা ভাল অনুভব করেছেন লুজিং ইন্টারবেলের কারণে। কিছুক্ষণ হাঁটাহাটির পর তার মাথায়  আবারও রক্তক্ষরণ হয়। অবস্থা আরও খারাপ হলে তার মৃত্যু হয়। এখানে ইনজেকশন কোনও বিষয় নয়। আর সুমন শুধুমাত্র মাস্ক ধরে রেখেছিল। যেটা স্বজন বা নার্স যেকেউ করতে পারেন। এক্ষেত্রে সুমনের কোনও দোষ নেই।’

উল্লেখ্য, গত ১৮ সেপ্টেম্বর সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন কেরানীগঞ্জের বিপ্লব মণ্ডল। নিউরো সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৩ সেপ্টেম্বর তার মৃত্যু হয়।

আরজে/এপিএইচ/

আরও পড়ুন: 

ওয়ার্ড বয়ের ইনজেকশনে মারা গেল রোগী!