বেফাকের দায়িত্বে নতুন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ও বিশেষ কমিটি

বেফাক সভাপতি আল্লামা শাহ আহমদ শফী

বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের (বেফাক) পরিচালনার দায়িত্বে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। গঠিত হয়েছে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন একটি বিশেষ কমিটি, ৫ জনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি পদে।এছাড়া,ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে ঢাকার ফরিদাবাদ মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা আব্দুল কুদ্দুসকে এবং  বর্তমান সহকারী মহাপরিচালক মাওলানা যোবায়ের আহমাদ চৌধুরীকে ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সোমবার (২১ নভেম্বর) চট্টগ্রামে  বেফাকের কার্যনির্বাহী পরিষদের এক জরুরি সভায়  এসব সিদ্ধান্ত হয়।

চট্টগ্রামে দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালকের কার্যালয়ে বেফাক সভাপতি আল্লামা শাহ আহমদ শফীর সভাপতিত্বে সভায় বেফাকের প্রশাসনিক বিষয় এবং কওমি মাদ্রাসা সনদের মানের স্বীকৃতি প্রসঙ্গে আলোচনা হয়।

বেফাকের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল জাব্বার জাহানাবাদী ইন্তেকাল করায়, কার্যনির্বাহী পরিষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে বেফাকের কাউন্সিল অধিবেশন পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে ঢাকা ফরিদাবাদ মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা আব্দুল কুদ্দুসকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।অন্যদিকে বর্তমান সহকারী মহাপরিচালক মাওলানা যোবায়ের আহমাদ চৌধুরীকে ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালকের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

02 Befaque Sova-21-11-2016

সভায় বেফাকের কেন্দ্রীয় কমিটিতে সহ-সভাপতি পদে অতিরিক্ত পাঁচ জনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।তারা হলেন, মাওলানা সাজেদুর রহমান, মাওলানা সফি উল্লাহ, মাওলানা নূরুল ইসলাম, মাওলানা আব্দুল হামিদ, মাওলানা আবদুর রব ও মাওলানা মোসলেহ উদ্দীন রাজু।বেফাকের কার্যক্রম পরিচালনায়  সহজতর করার লক্ষ্যে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন একটি বিশেষ কমিটিও গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যরা হলেন, মাওলানা আশরাফ আলী, মাওলানা আনোয়ার শাহ, মাওলানা মুফতী ওয়াক্কাস, মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস (ফরিদাবাদ), মাওলানা নূরুল ইসলাম, মাওলানা সাজেদুর রহমান, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা মুফতী নূরুল আমীন, মাওলানা আব্দুর রব, মাওলানা মুহাম্মদ আনাস মাদানী, মাওলানা মুসলেহ উদ্দীন রাজু ও মাওলানা মুনিরুজ্জামান।

কার্যনির্বাহী পরিষদের সভায় বেফাকের প্রশাসনিক বিষয়াদি এবং কওমি মাদ্রাসা সনদের স্বীকৃতি প্রসঙ্গে আলোচনা হয়। কওমি সনদের বিষয়ে বেফাকের নীতিগত অবস্থান তুলে ধরার জন্য শিগগিরই প্রধানমন্ত্রীর কাছে ১০ সদস্যের বেফাক প্রতিনিধি দল আল্লামা শাহ আহমদ শফীর চিঠি হস্তান্তর করবেন বলেও সভায় জানানো হয়।কওমি মাদ্রাসা সনদের স্বীকৃতি বিষয়ে বেফাকের নেতারা একমত পোষণ করেন।ভারতের দারুল উলূম দেওবন্দের আট মূলনীতি অক্ষুণ্ন  রেখে মাদ্রাসা পরিচালনায় কোনোরূপ সরকারি নিয়ন্ত্রণ এবং সিলেবাসে হস্তক্ষেপ ছাড়া কওমি মাদ্রাসার স্বকীয় বৈশিষ্ট বজায় রেখে, বেফাকের মাধ্যমে দাওরায়ে হাদিসের সনদের মান গ্রহণের বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। কোনোরূপ প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সরকারি নিয়ন্ত্রণ এবং কওমি বৈশিষ্ট ও ভারতের দারুল উলূম দেওবন্দের নীতিমালার সঙ্গে কোনোরূপ আপোষ করে সনদের মান গ্রহণের সুযোগ নেই বলেও সকলে একমত পোষণ করেন।

03 Befaque Sova-21-11-2016

বেফাক সভাপতি শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফীর সভাপতিত্বে বেফাক কার্যনির্বাহী পরিষদের সভায় উপস্থিত ছিলেন, আশরাফ আলী, নূর হোসাইন কাসেমী,  মুহাম্মদ জুনায়েদ বাবুনগরী, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা আব্দুল হামিদ, মাওলানা আনোয়ার শাহ, মাওলানা সাজেদুর রহমান, মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ ওয়াক্কাস, মাওলানা যোবায়ের আহমাদ চৌধুরী, মাওলানা নূরুল ইসলাম, মুফতী নূরুল আমীন, মাওলানা মুফতী ফয়জুল্লাহ, মাওলানা ছফি উল্লাহ, মাওলানা মাহফুযুল হক, মুফতী ওমর ফারুক, মাওলানা আনাস মাদানী, মাওলানা ওবায়দুর রহমান মাহবুব, মাওলানা আনোয়ারুল করীম, মাওলানা ইয়াসীন, মাওলানা মুনীরুজ্জামান, মাওলানা আব্দুর রহমান, মাওলানা নূরুল হুদা ফয়জী, মাওলানা মুসলেহ উদ্দীন রাজু, মাওলানা মাসউদুল করীম, মুফতী গোলামুর রহমান, মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম, মাওলানা মোস্তাক আহমদ, মাওলানা আইনুদ্দীন, মাওলানা আব্দুল হামিদ কুষ্টিয়া, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস মিরপুর প্রমুখ।

সভায় বেফাকের পক্ষ থেকে আরাকানের রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর মায়ানমার সেনাবাহিনী ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকজনের হাতে  বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণ, বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে উচ্ছেদসহ জাতিগত নির্মূল অভিযানের বিরুদ্ধে মায়ানমার সরকারের তীব্র নিন্দা ও কঠোর প্রতিবাদের পাশাপাশি জাতিসংঘ, ওআইসিসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে রোহিঙ্গা ইস্যু তুলে ধরার জন্যে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি জোর আহ্বান জানানো হয়। বেফাক কার্যনির্বাহী পরিষদের সভায়  নাসিরনগরসহ দেশের কয়েকটি স্থানে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ও মন্দির ভাঙচুরের ঘটনায়ও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সংখ্যালঘুদের স্বাধীনভাবে ধর্মকর্ম পালনসহ তাদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্যে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

/সিএ/এপিএইচ/

আরও পড়ুন: যে কারণে বন্ধ হচ্ছে না অবৈধ ভবন নির্মাণ