এদিকে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায়, তার স্বামী ও মামলার প্রধান আসামি মোহাম্মদ আসিফ প্রিসলিকে আদালত ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। রায়ের আগে ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাঈদ আহমেদ তার পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘যৌতুকের কারণে সিফাতকে মারধরের অভিযোগ এ মামলায় প্রমাণিত হয়নি। ফলে সিফাতের শ্বশুর অ্যাডভোকেট হোসেন মোহাম্মদ রমজান, শাশুড়ি নাজমুন নাহার নজলী এবং প্রথম ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান জোবাইদুর রহমানকে বেকসুর খালাস দিয়েছে আদালত।’
প্রসঙ্গত,২০১৫ সালের ২৯ মার্চ রাতে রাজশাহী শহরের মহিষবাথান এলাকায় শ্বশুরবাড়ি থেকে সিফাতকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই ঘটনার পর রাজপাড়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন সিফাতের চাচা মিজানুর রহমান খন্দকার।
রায়ে মৌখিক পর্যালোচনায় বিচারক বলেন, ‘সিফাত ও আসিফ একসঙ্গে কলেজে পড়তো। প্রেম থেকে তাদের বিয়ে হয়। বিচার করতে গিয়ে আমার মনে হয়েছে, সিফাতের পরিবার, অর্থাৎ তার বাবা-মা এ বিয়ে মেনে নিতে পারেননি। আর তাদের মধ্যে ঝগড়া বা মারামারি, অথবা যৌতুক চাওয়ার কোনও প্রমাণ মামলার বিচারকালে পাওয়া যায়নি।’
রায় ঘোষণার সময় বিচারক প্রশ্ন করেন, “দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে হত্যা চিহ্নিত হলো কীভাবে, হত্যার মোটিভ কী ছিল, তা উন্মোচন করতে পুলিশ ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি তৃতীয় তদন্ত কর্মকর্তাও ব্যর্থ হয়েছেন। বার বার আসিফকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেও দ্বিতীয়, তৃতীয় তদন্ত কর্মকর্তা কিছুই বের করতে পারেননি।”
উল্লেখ্য, প্রথম ময়নাতদন্তের পর রাজশাহী মেডিক্যালের চিকিৎসক জোবাইদুর রহমানও বিষয়টিকে ‘আত্মহত্যা’ বলে ঘোষণা করেন। পরিবারের আবেদনের পর রংপুরের নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে শহরের মুন্সিপাড়া কবরস্থান থেকে সিফাতের লাশ তুলে দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত করা হলে রংপুর মেডিক্যালের তিন চিকিৎসকের করা দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়, সিফাতের মৃত্যু হয়েছে ‘মাথায় আঘাতজনিত কারণে’।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্দশ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন সিফাত। তার সতীর্থরা ন্যয়বিচারের দাবিতে ২৮ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সামনে প্রতিবাদী সমাবেশ ও মানববন্ধনের আয়োজন করেন।
/ইউআই /এপিএইচ/
আরও পড়ুন: