বিচারকের স্বাক্ষর জাল করে ১০৬ আসামিকে মুক্তি, পেশকারসহ ৫ জনের কারাদণ্ড

ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত

বিচারকের স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া জামিননামা তৈরি করে ৭৬টি মামলার ১০৬ আসামিকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আদালতের পেশকারসহ ৫ জনকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

আজ বুধবার বিশেষ জজ আদালত আখতারুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন।

তিনি রায়ে ৫ আসামির প্রত্যেককে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৪৬৩ ধারায় ৭ বছর ও ৪৭১ ধারায় ৭ বছর করে মোট ১৪ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন। কিন্তু, দুটি সাজা একসঙ্গে কার্যকর হওয়ায় তাদের প্রত্যেককে প্রকৃতপক্ষে ৭ বছর করে কারাভোগ করতে হবে।

কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, ঢাকা অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের সাবেক বেঞ্চ সহকারী মোসলেহ উদ্দিন ভুইয়া, আদালতের স্টাফ মো. নাঈম ও ৩ জন উমেদার আলমগীর হোসেন, মো. ইসমাইল ও মো. জাহাঙ্গীর। এরমধ্যে উমেদার আলমগীর হোসেন ও মো. জাহাঙ্গীর উভয়েই শুরু থেকে পলাতক আছেন। রায় শুনে আদালতের স্টাফ মো. নাঈম কান্নায় ভেঙে পড়ে।

এরা পরস্পরের যোগসাজশে প্রতারণা করেছে উল্লেখ করে আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেন, তদন্তকারী কর্মকর্তার কিছু গাফলতি থাকায় এই জামিননামাগুলোতে যে ৬১ আইনজীবীর স্বাক্ষর পাওয়া গেছে তাদের কাউকে আসামি বা সাক্ষী কিছু করা হয়নি। আদালত দুদকের মহাপরিচালক বরাবর রায়ের কপি পাঠিয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।

এর আগে নাসির উবায়দুল করিম আকন্দ বাদী হয়ে ২০১৫ সালে ১২ জুলাই কোতায়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন। দুদকের সহকারী পরিচালক মো. সফিউল্লাহ ২০১৬ সালে চার্জশিট দাখিল করেন। এরপর বিশেষ জজ আদালত আখতারুজ্জামান ২০১৬ সালের ১৫ জুন অভিযোগ গঠন করেন। মোট ৩৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৫ জনের সাক্ষ্য নেন আদালত।

উল্লেখ্য, মামলাগুলোতে কোনও প্রকার জামিনের আদেশ ছাড়াই আদালতের নথিতে জামিনের দরখাস্তসহ জামিননামা অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ওইসব জামিননামায় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ সামছুন্নাহারের স্বাক্ষর জাল করা হয়। সাক্ষ্য প্রমাণে বেরিয়ে আসে, আসামিরা আদালতের ভেতরে অবস্থান করে বিচারকের অগোচরে গোপনে ভুয়া জামিননামাগুলো তৈরি করেছিলেন।

/এসআইটি/ইউআই/টিএন/