সম্প্রতি রানা প্লাজা ধসের চার বছর পূর্তিতে ক্ষতিপূরণের দাবিতে সক্রিয় হয়ে ওঠা বিভিন্ন সংগঠনের কাছ থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
রুবেল মিত্র বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমার মতো অনেকেই দোকানের পজেশন কিনে কোটি টাকা ক্ষতির হয়েছেন।’
কম্পিউটার ওয়ার্ল্ডের ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রানা প্লাজার প্রথম তলায় ৭০ নম্বর দোকানটি ছিল আমার। রানাকে ২ লাখ টাকা অগ্রিম দিয়ে দোকান চালু করে ৫০ হাজার টাকার মালামাল তুলেছিলাম। সেই দোকানের ব্যবসায়ী হিসাবে আমি ক্ষতিপূরণের দাবিদার।’ আর দোকান মালিক হিসেবে রানা দুর্ঘটনার পর থেকেই ক্ষতিপূরণ দাবি করে আসছে বলে জানান তিনি।
রানা প্লাজা ধসের চার বছর পেরিয়ে গেলেও একটি টাকাও ক্ষতিপূরণ পাননি রানার কাছ থেকে পজেশন কিনে নেওয়া দোকান মালিকরা। এসব দোকানে পুঁজি খাটানো ব্যবসায়ীদের অনেকেই আজ মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
হক বোরখা হাউজের ব্যবসায়ী মামুন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ভবন ধসের নিচে চাপা পড়িনি। কিন্তু সারাজীবনের সঞ্চয়ে কেনা দোকান ও ব্যবসা হারিয়ে আর্থিকভাবে একেবারেই পঙ্গু হয়ে গেছি।’
ব্যবসায়ী শাহ জামাল বলেন, ‘আমরা তো কারও কাছে হাত পাততে পারি না। আমার অবস্থান কোথায় দাঁড়িয়েছে, একবার ভাবুন। আমাদের কথা কেউ বলে না।’
রানা প্লাজার প্রথম তলার ৫ নম্বর দোকানের মালিক ছিলেন রিপন মাহমুদ। দোকানের নাম ছিল মাসফি। ৩৮ লাখ টাকায় পজেশন আর ১৮ লাখ টাকার পণ্য কিনে ব্যবসা করছিলেন তিনি। বলতে গেলে তার সারাজীবনের সঞ্চয়ই ছিল ওই দোকানে। সবই হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন তিনি। একইভাবে ১৮, ১৯ ও ২০ নম্বর দোকানের মালিক স্বপনের ক্ষতি কোটি টাকারও বেশি। একইভাবে রানা প্লাজার প্রথম ও দ্বিতীয় তলার প্রায় ২শ’ ব্যবসায়ী ও দোকান মালিকের ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৭০ কোটি টাকা।
রানা প্লাজার দোকান মালিক ও ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণের দাবি প্রসঙ্গে সাবেক এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দোকান মালিক ও ব্যবসায়ীরা আমার কাছে এসেছিলেন। তাদের জন্য চেষ্টা করেছি। কিন্তু পরে আর বিষয়টি সামনে আগায়নি। পরে কী হয়েছে তাও বলতে পারব না। এতদিন পর কারা ক্ষতিপূরণ পেয়েছিলেন আর কারা পাননি— তার কিছুই আর মনে নেই।’
/টিআর/টিএন/আপ-বিএল/