সাংবাদিক ওমর ফারুকের নামে অ্যাওয়ার্ড দেবে ডিআরইউ

ডিআরইউয়ের সামনে ওমর ফারুকের প্রথম জানাজাবাংলা ট্রিবিউনের বিশেষ প্রতিনিধি এবং নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি সদ্য প্রয়াত ওমর ফারুকের নামে রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ডের চালুর ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)। নগর উন্নয়ন বিষয়ক প্রতিবেদনের জন্য রিপোর্টারদের ‘ডিআরইউ ওমর ফারুক স্মৃতি পুরস্কার’ অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হবে। রবিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সামনে ওমর ফারুককে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর সময় এ ঘোষণা দেন ডিআরইউ সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা। এছাড়া প্রয়াত সাংবাদিক ফারুকের দুই কন্যা সন্তানকে ডিআরইউ শিক্ষা বৃত্তি-২০১৭ দেওয়ার কথাও জানানো হয়।
এ বিষয়ে বাদশা জানান, ডিআরইউ’র স্থায়ী সদস্য হিসেবে সংগঠনের পক্ষ থেকে এক লাখ টাকা, সংগঠনের সদস্য বীমা থেকে প্রাপ্য দুই লাখ টাকা এবং শিক্ষা বৃত্তি হিসেবে ওমর ফারুকের দুই কন্যা সন্তানকে ২৪ হাজার টাকাসহ মোট ৩ লাখ ২৪ হাজার টাকা অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে।

ডিআরইউয়ে ওমর ফারুকের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তব্য রাখছেন ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকনউল্লেখ্য, রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে রবিবার (৩০ এপ্রিল) রাত সাড়ে তিনটার দিকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ওমর ফারুক (ইন্না লিল্লাহি...রাজিউন)। আগামী ২ মে তার বয়স ৫২ বছর পূর্ণ হওয়ার মাত্র দু’দিন আগেই রবিবার ভোররাতে অকালমৃত্যু ঘটে।

দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সামনে ওমর ফারুককে শেষ শ্রদ্ধা জানান বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা। সেখানে নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ওমর ফারুককে স্মরণ করে ডিআরইউ সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা বলেন, ‘ওমর ফারুক ভিন্ন রকমের একজন মানুষ। চিন্তা-চেতনায় ছিলেন মননশীল। ডিআরইউ-এর উন্নয়নে তার অনেক অবদান রয়েছে। নগর উন্নয়ন সাংবাদিকতায় তার কর্ম অনুকরণীয়। তিনি নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম গঠন করেন।

সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সম্প্রতি সংগঠনের প্রয়াত ১৭ জন সদস্যের সন্তানদের মাঝে শিক্ষা বৃত্তি দেওয়া হয়েছে। ওমর ফারুকের সন্তানদেরও এ বৃত্তির দেওয়া হবে। বৃত্তির আওতায় পরিবার প্রতি মাসে দুই হাজার টাকা করে বার্ষিক এককালীন ২৪ হাজার টাকা বৃত্তি দেওয়া হবে।

সাংবাদিক ওমর ফারুকের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদনসাংবাদিকদের পক্ষ থেকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন উপস্থিত হন। ফারুকের পরিবারের জন্য তার পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন মেয়র।

ওমর ফারুক দৈনিক সমাচার, দৈনিক রূপালী, দৈনিক আজকের কাগজ, দৈনিক যুগান্তর ও বাংলা ট্রিবিউনে কাজ করেছেন। তিনি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির স্থায়ী সদস্য। মৃত্যুর সময় স্ত্রী ও দুই কন্যা রেখে গেছেন তিনি। পাঁচ ভাই ও চার বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। তার প্রথম মেয়ে ফারিহা ওমর ইরা দশম শ্রেণিতে পড়েন এবং দ্বিতীয় মেয়ে দীপিকা ওমর দিয়া ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী। তার স্ত্রী সানজিদা ওমর সৈকত।

প্রসঙ্গত, শনিবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে অফিসে প্রবেশের সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে ওমর ফারুককে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সংবাদ সংগ্রহ শেষে শনিবার বেলা দেড়টার দিকে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর থেকে অফিসের গেটে এসে পৌঁছার পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্কয়ার হাসপাতালে ইসিজি ও এনজিওগ্রাম করার পর হার্টের শিরায় দু’টি ব্লক ধরা পড়ে। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে সিসিইউতে নেওয়া হয়। চিকিৎসকরা শুরুতে হার্টের শিরায় রিং পড়াতে চাইলেও কিছু জটিলতা দেখা দেওয়ায় তার বাইপাস সার্জারির প্রয়োজন হবে বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। তবে তার আগেই সবাইকে কাঁদিয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

ছবি: নাসিরুল ইসলাম/সিএ/এসএমএ/টিএন/

আরও পড়ুন-
শেষ বিদায়ে স্বজন হারানো কান্নায় ভারি বাংলা ট্রিবিউন

বাংলা ট্রিবিউনের সাংবাদিক ওমর ফারুক আর নেই