৫৭ সহ তথ্য-সম্প্রচার নীতিমালার ছয়টি ধারা সংশোধনের দাবি

টিআইবিজাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা, ২০১৭ এর বিতর্কিত ৫৭ ধারাসহ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন এবং জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালার ছয়টি ধারা সংশোধনের দাবি জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। তারা মনে করে এই ধারাগুলো গণমাধ্যমের সুষ্ঠু বিকাশের প্রধান অন্তরায়। বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানায় টিআইবি।
টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘নীতিমালা অনুযায়ী অনলাইন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের সম্পাদকীয় নীতিমালা প্রস্তাবিত কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত করার যে বাধ্যবাধকতা রাখা হয়েছে, তা গণমাধ্যমের স্বাধীন মত প্রকাশের সাংবিধানিক অধিকার বাধাগ্রস্ত করতে পারে।’
এছাড়া, এই নীতিমালায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬ এর ৫৭ (১) উপধারা এবং (৮০) ও (৮৬) ধারা এবং জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা, ২০১৪ এর ৫ (১.৩), ৫ (১.৫) ও ৫ (১.৯) বিতর্কিত ধারাসমূহ অর্ন্তভুক্ত হওয়ায় অনলাইন গণমাধ্যমসহ অন্যান্য গণমাধ্যমকেও মেনে চলতে হবে, যা গণমাধ্যমের সুষ্ঠু বিকাশের প্রধান অন্তরায় ও সংবিধান স্বীকৃত চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা পরিপন্থী।
নীতিমালাটি অধিকতর যুগোপযোগী করার জন্য বিভিন্ন সময়ে সংশ্লিষ্টরা যে সুনির্দিষ্ট মতামত ও সুপারিশমালা দিয়েছেন তা সঠিকভাবে নীতিমালায় প্রতিফলিত হয়নি, বলেও দাবি করেন টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। ফলে, অনলাইন গণমাধ্যমসহ অন্যান্য গণমাধ্যমসমূহের স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ ক্ষেত্রবিশেষে বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সম্প্রতি মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত নীতিমালায় অনলাইন গণমাধ্যমের সংজ্ঞায়ন নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে নিবন্ধিত সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানকে অনলাইন গণমাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করা এবং এর মাধ্যমে এসব সংস্থাকে গণমাধ্যম নীতিমালার আওতাভুক্ত করা অযৌক্তিক, তাই অনলাইন গণমাধ্যমের সংজ্ঞায়ন আরও স্পষ্টতর হওয়া বাঞ্ছনীয়।’

এছাড়া, তথ্য মন্ত্রণালয়কে এই নীতিমালা বাস্তবায়নের সাময়িক দায়িত্ব প্রদান না করে অনতিবিলম্বে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের মতামতের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট খাতে যোগ্যতাসম্পন্ন, গ্রহণযোগ্য ও দল-নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি স্বাধীন সম্প্রচার কমিশন গঠন এবং কমিশন যেন ভয়-ভীতি ও পক্ষপাতহীনভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারে তা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় টিআইবি। একই সঙ্গে, কমিশন না হওয়া পর্যন্ত গণমাধ্যমের অধিকতর স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে গণমাধ্যম নীতিমালাসমূহের বাস্তবায়ন স্থগিত রাখারও জোর দাবি জানায় সংগঠনটি।

/আরজে/এমও/