ফায়ার সার্ভিসের ডাটাবেজ আলোর মুখ দেখবে কবে?

দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থায়নে তৈরি হচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের ডিজিটাল ডাটাবেজ। রাজধানীর ছোট-বড় সব ধরনের ভবনের ডাটাবেজ তৈরি জন্য এরইমধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) টেকনিক্যাল অ্যাসিসট্যান্ট প্রজেক্টের (টিএ) চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। এ ডাটাবেজ তৈরিতে তারা ৬৫ কোটি টাকা অনুদান দেবে বলেও জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আতাউল হক। প্রজেক্টটি এখন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। সেখান থেকে অনুমোদন পেলেই এই ডাটাবেজের কাজ শুরু করা হবে।
উত্তরায় আগুনফায়ার সার্ভিসের এই প্রকল্প পরিচালক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ডিজিটাল ফরমেটে ডাটাবেজ তৈরি হলে অনুমোদনের বাইরে ভবন নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে। ফায়ার সার্ভিসের এই ডাটাবেজের সঙ্গে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষেরও শেয়ারিং থাকবে। যেন ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে যেকোনও দুর্যোগে উদ্ধার তৎপরতায় ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে।’
গত ৩ জুলাই রাজধানীর উত্তরার ৪ নম্বর সেক্টরের প্রধান সড়কের পাশে সি শেল চাইনিজ রেস্টুরেন্ট ও পার্টি সেন্টারে আগুন লেগে পুরো ভবনই ছাই হয়ে যায়। পরে আরও দু’টি ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। সেগুলোরও ব্যাপক ক্ষতি হয়। ওই ভবনে থাকা একটি আবাসিক হোটেলে দুই জন দগ্ধ হয়ে মারা যান।
ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘তিনটি ভবনই আগুনের ঝুঁকিতে ছিল। আমরা তিনটি ভবনকেই চিঠি দিয়ে সতর্ক করেছিলাম। তারা চিঠি রিসিভও করেছে। কিন্তু তারা সতর্ক হয়নি। আগুন নেভানোর কোনও ব্যবস্থাও ছিল না, তাই দ্রুত ছড়িয়েছে।’
উত্তরায় আগুনফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, ফায়ার সার্ভিসের আইন অমান্যের জন্য সরাসরি ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা নিতে পারে না। আইন কার্যকর করতে হলে অন্য কোনও সংস্থার সহায়তা নিতে হয়। মাঝে একবার ফায়ার সার্ভিস রুলস অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট চালানোর পরিকল্পনা থাকলেও উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞার পর সেই পরিকল্পনাও বাতিল করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসকে ক্ষমতা দেওয়া জরুরি বলেও মনে করেন তারা।
যুগ্ম সচিব আতাউল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা এখন অনেক বেড়েছে। এরপরও দেশের যেকোনও দুর্যোগে প্রথম সাড়াদানকারী সংস্থা ফায়ার সার্ভিসের কার্যক্রমকে আরও আধুনিকায়ন করা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘রাজউক ও ফায়ার সার্ভিসের সম্মিলিত পরামর্শে ও ডিজাইনে ভবন নির্মাণ করলে সাড়ে সাত মাত্রার ভূমিকম্পেও ক্ষয়ক্ষতি থাকবে খুবই সীমিত। এছাড়া রাজধানীর আগুনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ সব ভবন চিহ্নিত করা গেছে। এগুলোর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হবে বলেও তিনি জানান।

/এমএনএইচ/আপ-এমও/