ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন টিভি চ্যানেল উদ্বোধন

ঢাবির টেলিভিশন, ফিল্ম ও ফটোগ্রাফি বিভাগে ‘ডিইউ টিভি’ চ্যানেলের স্টুডিও উদ্বোধন‘ডিইউ টিভি’ নামে একটি অনলাইন টেলিভিশন চ্যানেল চালু করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) সকাল পৌনে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, ফিল্ম ও ফটোগ্রাফি বিভাগে আনুষ্ঠানিকভাবে চ্যানেলটির স্টুডিও উদ্বোধন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই স্টুডিওর উদ্বোধন করেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের ‘হাইয়ার এডুকেশন কোয়ালিটি এনহান্সমেন্ট প্রোগ্রাম’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এ স্টুডিও নির্মাণ করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন এবং টেলিভিশন, ফিল্ম ও ফটোগ্রাফি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ জে এম শফিউল আলম ভূঁইয়া। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন টেলিভিশন, ফিল্ম ও ফটোগ্রাফি বিভাগের বর্তমান চেয়ারম্যান রিফাত ফেরদৌস।

অনুষ্ঠানে ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে আমি সেকেন্ড হোম মনে করি। শিক্ষা সহায়ক এই স্টুডিও শিক্ষার্থীরা কাজে লাগালেই এর সার্থকতা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যাক।’

অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘একটা শক্তিশালী মাধ্যম যদি যোগ্য মানুষের হাতে থাকে, তাতে সমাজ ও সভ্যতা উপকৃত হয়। টেলিভিশন বা গণমাধ্যম নিয়ে যারা কাজ করেন বা করতে আগ্রহী তাদের গণমাধ্যমের ব্যাকরণ জানতে হবে। সে লক্ষ্যেই এই স্টুডিও নির্মাণ করা হয়েছে। এর আগে ১৯৯৬ সালে আমি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রধান থাকাকালীন একটি আধুনিক মিডিয়া সেন্টার নির্মাণ করেছিলাম।’

ঢাবির টেলিভিশন, ফিল্ম ও ফটোগ্রাফি বিভাগের বর্তমান চেয়ারম্যান রিফাত ফেরদৌস রিফাত ফেরদৌস বলেন, ‘গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী থাকাকালীন আমি গণমাধ্যমে একটি চাকরির আবেদন করেছিলাম। সাক্ষাৎকারে জানতে চাওয়া হয়েছিল গণমাধ্যমে কাজ করার বাস্তব অভিজ্ঞতা আমার আছে কিনা। তখনও আমি শিক্ষার্থী, কোথাও কাজ করার সুযোগ হয়নি। অভিজ্ঞতা আমি কোথায় পাব? সেদিন খুব মন খারাপ হয়েছিল এবং বিভাগের ওপর রাগ হয়েছিল। আমরা চাই, আমাদের পরে যারা আসবে, তারা যেন সুযোগগুলো পায়। সে লক্ষ্যেই এই স্টুডিও।’

অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্যে অধ্যাপক শফিউল আলম ভূঁইয়া বলেন, ‘স্টুডিও নির্মাণের কাজটি এক বছরের হলেও এতে দুই বছর লেগেছে। আমরা অনলাইনে রেজিস্ট্রেশনের ভিত্তিতে টেন্ডার আহ্বান করেছি। কিন্তু ভেন্ডররা এতে উৎসাহী ছিলেন না। তাই দেরি হয়েছে।’

অধ্যাপক শফিউল আলম ভূঁইয়া বলেন, ‘ক্যাম্পাসভিত্তিক একটি কেবল টিভি চালু করার স্বপ্ন থাকলেও কম বরাদ্দের কারণে সেটি সম্ভব হয়নি। আমরা পাঁচ কোটি টাকা চাইলেও পেয়েছি তিন কোটি টাকা। কারিগরি কাজে গণমাধ্যমের কয়েকজন ব্যক্তি আমাদের বিনামূল্যে ও নিঃস্বার্থে সহায়তা করেছেন। তাদেরকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। আমাদের বিভাগের মাত্র ছয় জন শিক্ষক ক্লাসের পাশাপাশি এ স্টুডিওর জন্য নিরলস পরিশ্রম করেছেন। এই চ্যানেলকে কমার্শিয়ালি রেন্ট করা হবে।’

অনুষ্ঠানে টেলিভিশন, ফিল্ম ও ফটোগ্রাফি বিভাগের শিক্ষক এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠান শেষে নবনির্মিত স্টুডিওতে পরীক্ষামূলকভাবে একটি টক-শোর আয়োজন করা হয়।

/এসএমএ/