মুক্তামনির শারীরিক অবস্থার হঠাৎ অবনতি

 

বিরল রোগে আক্রান্ত মুক্তামনি

বিরল রোগে আক্রান্ত মুক্তামনির শারীরিক অবস্থা হঠাৎ করেই  অবনতি হয়েছে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক চিকিৎসক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) তার জ্বর হয়। তাপমাত্রাও ছিল অনেক বেশি। আজ  (বুধবার) সকাল থেকে তার আক্রান্ত হাত থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। রক্তের প্লাটিলেটও কমে গেছে। যদিও আমরা সঙ্গে সঙ্গে তার চিকিৎসা নিয়ে নিজেরা পরামর্শ করেছি। সাধ্যমতো যা কিছু করা যায়,সেই চেষ্টা করছি ।

একই কথা জানান মুক্তামনির বাবা মো. ইব্রাহীম হোসেনও। তিনি বলেন, ‘গতকাল (মঙ্গলবার) রাতে মেয়ের জ্বর ছিল ১০২ ডিগ্রি। সকাল থেকে ডান হাত থেকে অল্প অল্প করে রক্ত পরলেও দুপুরের পর থেকে সেটা বেড়েছে। একের পর এক ডাক্তাররা আসছেন, কিন্তু আমি তো মেয়েটাকে নিয়ে ভয় পাচ্ছি ।’

এদিকে, বার্ন ইউনিটের একটি সূত্র জানায়, তারা ইতোমধ্যেই মুক্তামনির বিষয়ে অন্যান্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের ডেকেছেন। মেডিসিন, হেমাটোলজি বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা দেখে গেছেন। সবাই মিলে এখন সিদ্ধান্ত নেবেন, কী করা যায়। তবে রক্তক্ষরণের জন্য কিছুক্ষণের মধ্যেই এক ব্যাগ রক্ত দেওয়া হবে মুক্তামনিকে। বার্ন অ্যান্ড প্ল্যাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, মুক্তামনির জন্য ‘এ’ পজিটিভ রক্তের আহ্বান করছি সবার কাছে।

প্রাথমিকভাবে মুক্তামনি বিরল ‘লিমফেটিক ম্যালফরমেশন’ রোগে আক্রান্ত বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তার চিকিৎসায় আট সদস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ডও গঠন করা হয়েছে। মুক্তামনির চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রসঙ্গত, ১১ বছরের মুক্তামনির ডান হাত ফুলে গিয়ে দেহের চেয়েও ভারী হয়ে গেছে। সাদা রঙের শত শত পোকা ঘুরে বেড়াচ্ছে সেই ফুলে যাওয়া অংশে। চার বছর ধরে এই ‘বোঝা’ বয়ে বেড়াচ্ছে ছোট্ট শিশুটি।

উল্লেখ্য, মুক্তামনির কী অসুখ জানেন না চিকিৎসকরাও! এই শিরোনামে বাংলা ট্রিবিউনে খবর প্রকাশিত হয়। পরে অন্যান্য সংবাদ মাধ্যমেও এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন আসে। এরপর স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদের নির্দেশে সোমবার (১০ জুলাই) সাতক্ষীরা সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বাড়িতে গিয়ে মুক্তাকে নিয়ে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে আসেন। এরপর মুক্তামনির চিকিৎসার জন্য ৮ সদস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয় এবং মুক্তামনির চিকিৎসার দায়িত্বও নেন প্রধানমন্ত্রী। 

/জেএ/ এপিএইচ/