গত অর্থবছরে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতি প্রায় ৪৩০ কোটি টাকা: ফায়ার সার্ভিস ডিজি

 

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহাম্মেদ খান (ফাইল ছবি: নাসিরুল ইসলাম/ বাংলা ট্রিবিউন)গত অর্থবছরে (২০১৬-১৭) সারাদেশে ১৮ হাজার ৪৮টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহাম্মেদ খান। তিনি বলেন, ‘এসব ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৪২৯ কোটি ৯৩ লাখ ৭৮ হাজার ৪৮ টাকা।  উদ্ধারের পরিমাণ আনুমানিক ২ হাজার ৪৯৮ কোটি ৫৪ লাখ ৫২ হাজার ৪১৮ টাকা। ২০১৬ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটেছে।’ শনিবার বাসসকে তিনি এসব কথা বলেন।

শতকরা ৭৫ ভাগ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয় বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে উল্লেখ করে ফায়ার সার্ভিস ডিজি বলেন, ‘চুলার আগুন, সিগারেটের টুকরা থেকেও অনেক সময় আগুন লাগে। এছাড়া উত্তপ্ত ছাই বা জ্বালানি, ছোটদের আগুন নিয়ে খেলা, যন্ত্রাংশের ঘর্ষণজনিত কারণেও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।’

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহাম্মেদ বলেন, ‘২০১৯ সালের মধ্যে সারাদেশে উপজেলা পর্যায়ে আরও ২৪৪টি নতুন ফায়ার স্টেশন স্থাপন করা হবে। অগ্নিকাণ্ড এবং হতাহত বন্ধ করতে দু’টি পৃথক প্রকল্পের মাধ্যমে এসব ফায়ার স্টেশন স্থাপন করা হবে। সরকারি অর্থায়নে ২০১৯ সালের মধ্যে এসব ফায়ার স্টেশন স্থাপনের জন্য চারটি প্রকল্পের মাধ্যমে ভূমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। বর্তমানে সারাদেশে ৩৩০টি ফায়ার স্টেশন অগ্নিনির্বাপণসহ বিভিন্ন দুর্যোগে কাজ করে যাচ্ছে । ৫৫২টি ফায়ার স্টেশন তৈরি করা হবে।’

ফায়ার সার্ভিস ডিজি বলেন, ‘বিভিন্ন ধরনের অগ্নিকাণ্ড, দুর্ঘটনা ও ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগ মোকাবিলায় কমিউনিটি লেভেলে ৬২ হাজার স্বেচ্ছাসেবক তৈরির বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এই পরিকল্পনার আওতায় ইতোমধ্যে ৩৬ হাজার ভলান্টিয়ারকে প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সক্ষম করে তোলা হয়েছে। কমিউনিটি লেভেলে এই ৬২ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রস্তুত করা গেলে ফায়ার সার্ভিসকর্মীদের সঙ্গে তারা উদ্ধার কাজে অংশ নিয়ে অনেক জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে সক্ষম হবেন। তৃণমূল পর্যায়ে অগ্নিনির্বাপণে দক্ষ কর্মী গড়ে তোলা সম্ভব হবে।’

কমিউনিটি লেভেলে ভলান্টিয়ার মনোনয়নের ক্ষেত্রে অধিদফতরকে স্থানীয় প্রশাসকরা সহযোগিতা করছে উল্লেখ করে ফায়ার সার্ভিস ডিজি বলেন, ‘ধীরে-ধীরে নগরায়ণ বাড়ছে। ঘর-বাড়ি, বহুতল ভবন, গার্মেন্টস ও শিল্পকারখানাও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। এর সঙ্গে দুর্যোগের ক্ষেত্রও বাড়ছে। তাই দুর্যোগের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে দমকলকর্মীদের পাশাপাশি ভলান্টিয়ারদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ দুর্যোগপ্রবণ দেশ, এই দুর্যোগ মোকাবিলার প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য সক্ষমতার সোসাইটি গড়ে তোলাই আমাদের উদ্দেশ্য। ছাত্র-ছাত্রী, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের কর্মী, ওয়ার্কসপকর্মী, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।’

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ডিজি বলেন, ‘স্কুল কলেজ, হাসপাতাল, বাণিজ্যিককেন্দ্র ও বহুতল ভবনে ফায়ার সার্ভিসের টিম গিয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। অগ্নিকাণ্ড ও ভূমিকম্পের সময় কী কী করতে হবে, সে ব্যাপারে সাধারণ জনগণকে সচেতন করা হয়।’

এছাড়া বস্তি, হকার্স মার্কেট, হাটবাজার, মহানগর ও শিল্প এলাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিয়মিতভাবে বছরব্যাপী মহড়া অনুষ্ঠান, অগ্নি প্রতিরোধে পরামর্শ প্রদান, গণসংযোগ ও প্রচারপত্র বিতরণ করা হয়।’
সূত্র: বাসস

/এমএনএইচ/