যাত্রীবেশী ছিনতাইকারীরাই এএসপি মিজানকে হত্যা করেছে: ডিএমপি

ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে প্রেস ব্রিফিং যাত্রীবেশী চার ছিনতাইকারী মিলে হাইওয়ে পুলিশের সহকারী কমিশনার (এএসপি) মিজানুর রহমান তালুকদারকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। শাহ আলম (৬২) নামের এক ছিনতাইকারীকে গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ প্রধান মনিরুল ইসলাম এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান। রবিবার (২৩ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টায় ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে এ বিষয়ে এক প্রেস ব্রিফিং হয়।  

গাজীপুরের টঙ্গি থেকে শনিবার (২২ জুলাই) রাতে শাহ আলমকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পাওয়া তথ্য সাংবাদিকদের জানায় পুলিশ।

ব্রিফিংয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ প্রধান মনিরুল ইসলাম জানান, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাহ আলম ওরফে আলম ওরফে বুড্ডা জানিয়েছে—তার সহযোগী মিন্টু, কামাল ওরফে ফারুক ও জাকির ২১ জুন ফজরের আজানের পর উত্তরার তিন নম্বর সেক্টরে একটি মসজিদের পাশে প্রাইভেটকারে যাত্রী বেশে বসে ছিল। এসময় মিজানুর রহমান ওই পথ দিয়ে যাওয়ার সময় তারা তাকে উঠতে বলে। এএসপি মিজান উঠার পর ফারুক বুঝতে পারে তিনি (মিজান) সরকারি লোক। তখন ফারুক পালানোর জন্য গাড়ি থেকে নেমে যায়। মিন্টু বলে তুই এভাবে পালিয়ে বাঁচতে পারবি। তখন ফারুক আবারও গাড়িতে উঠে।’

এএসপি মিজানুর রহমান তালুকদারমনিরুল জানান, ‘শাহ আলম জানিয়েছে চালকের আসনে ছিল জাকির। আর সে সামনে বসা ছিল। এ অবস্থায় তারা গাড়িতে গান বাজিয়ে ও লাইট বন্ধ করে দ্রুত গাড়ি চালিয়ে জসীম উদ্দিন রোড হয়ে প্রথমে হাউজ বিল্ডিং পরে উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরের দিকে যায়। তখন গাড়ির পেছনের সিটে বসা মিন্টু এএসপি মিজানের মাথায় লাঠি দিয়ে জোরে আঘাত করে। অন্ধকারে গাড়ির পেছনে বসা ফারুক ও মিন্টু ফিসফিস করে কথা বলছিল আর এএসপি মিজানের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করছিল। একজন এএসপি মিজানকে প্রাইভেটকারে থাকা ঝুট কাপড়ের টুকরা দিয়ে গলা পেঁচিয়ে ধরে থাকে। কিছুক্ষণ পর কোনও সাড়া-শব্দ না পেয়ে তারা ভয় পেয়ে যায়।  টহল পুলিশের ভয়ে মেইন রোড ব্যবহার না করে ১০ নম্বর সেক্টর থেকে গলি পথ ধরে বেড়িবাঁধ এলাকায় পৌঁছে। বিরুলিয়া ব্রিজের আগেই রাস্তার বাম পাশে ঘন গাছপালা দেখে জাকির গাড়ি থামায়। মিন্টু ও ফারুক দ্রুত মিজানকে মৃত অবস্থায় গাড়ি থেকে নামিয়ে রাস্তার বাম পাশে রেখে সবাই গাড়িতে উঠে চলে যায়।’

প্রেসব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) আবদুল বাতেন ও ডিএমপির উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

গত ২১ জুন রাজধানীর রূপনগর থানার মিরপুর বেড়িবাঁধের বোটক্লাব এলাকার রাস্তার পাশ থেকে এএসপি মিজানুর রহমান তালুকদারের (৫০) লাশ উদ্ধার করা হয়। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে স্থানীয়রা একটি ঝোপে তার মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে ডিএমপির রূপনগর ও সাভার থানা পুলিশ সেখানে গিয়ে তার লাশ উদ্ধার করে। পরে বুধবার (২১ জুন) রাত ১০টার দিকে এএসপি মিজানুর রহমান হত্যার ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের ছোট ভাই মাসুম তালুকদার। রুপনগর থানায় দায়ের করা মামলা নং-১৯। অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন তিনি। মামলাটি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) স্থানান্তর করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ (পশ্চিম) মামলাটি তদন্ত করছে।

/এসএমএন/এনআই/এফএস/ 

আরও পড়ুন:
এএসপি মিজান হত্যা: গ্রেফতার ১