এ বছর রাজধানীর অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভিকারুননিসা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষায় সর্বমোট এক হাজার ৮২১জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯৫৪ জন। এর মধ্যে বিজ্ঞান শাখা থেকে এক হাজার ২৮৮ জন অংশ নেয়। এ থেকে ৯২১জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। তিন জন শিক্ষার্থী বিভিন্ন কারণে পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। ব্যবসা শাখা থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ২৯০ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৩ জন।
অন্যদিকে, মানবিক শাখা থেকে পরীক্ষা দিয়েছে ২৪৩ জন। কিন্তু এ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ১০ জন। প্রতিষ্ঠানটিতে তুলনামূলক মানবিক শাখায় ফলাফল খারাপ হয়েছে বলে মনে করছে শিক্ষার্থীরা। তবে জিপিএ-৫ কমলেও পাসের হার ছিল ৯৯ দশমিক ৬২ শতাংশ। গত বছরের চেয়ে দশমিক তিন শতাংশ কম।
স্কুলের মানবিক শাখার শিক্ষার্থী তাহরিসা জেরির অভিযোগ, বিজ্ঞান শাখার চেয়ে মানবিক শাখায় প্রশ্ন ও উত্তরের ক্ষেত্রে লেখা অনেক বেশি। তাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তারা সব লেখা শেষ করতে পারে না। এ কারণে যে জিপিএ-৫ পাওয়া আশা করেছিল, সে পেয়েছে জিপিএ-৪।
জেরি বাংলা ট্রিবিউনকে বলে, ‘২ ঘণ্টা ১০ মিনিটে আমাদের থেকে সাতটা সৃজনশীল প্রশ্ন নেওয়া হয়। এটা তো সম্ভব না। এর প্রতিটি প্রশ্নের সঙ্গে থাকে আরও চারটি প্রশ্ন। এই চারটি প্রশ্নের জন্য থাকে ১০ মিনিট। চারটি প্রশ্ন ১০ মিনিটে লেখা কোনওভাবেই সম্ভব না।
জেরির আরও অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রতিবছর সিলেবাস পরিবর্তন করা হয়। কখনও এটা, আবার কখনো ওটা। বছরের অর্ধেক সময়ই চলে এভাবেই। একবার পরিবর্তন হবে, আবার হবে না। তাহলে আমরা পড়ব কখন? তখন আমরা বিভ্রান্ত হয়ে যাই— আসলে কী পড়ব কী লিখব?
জেরির দাবি, অন্যান্য বছর ৭৯ নম্বর পেলে তাকে ৮০ করে দেওয়া হতো। কিন্তু এবছর তা করা হয়নি। আমি শিক্ষার্থী। আমি জানি আমি কী পরীক্ষা দিয়েছি। তাহলে আমার নাম্বর কেনও এতো কম আসবে কেনও?’
জেরির মতো এমন অভিযোগ স্কুলের অন্যান্য শিক্ষার্থীদেরও। তাদের দাবি সৃজনশীল ও প্রশ্নে বৈষম্যের কারণে তাদের ফল আশানুরূপ হয়নি।
তবে নতুন পদ্ধতিতে প্রশ্ন মূল্যায়ণ এবং কম সময়ে অধিক প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের ফল খারাপ হয়েছে এমন দাবি মেনে নিয়েছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘জিপিএ কমলেও শিক্ষার মান বেড়েছে। দেশে ফলের অবস্থা শিক্ষার্থীদের জন্য ভালো। দেশের মোট ফল বিবেচনায় আমরা সন্তুষ্ট।’
এ বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় সারাদেশে ১০টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৯১ শতাংশ। দশ শিক্ষা বোর্ডে মোট জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৩৭ হাজার ৭২৬ জন।
/এসএমএ/