নারীর পেটে গজ : তিনজনকে হাইকোর্টে তলব

হাইকোর্টসন্তান প্রসবের সময়ে করা অস্ত্রোপচারের সাড়ে তিন মাস পর এক নারীর পেট থেকে গজ বের করার ঘটনায় পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন ও বরিশাল মেডিক্যালের গাইনি বিভাগের প্রধানসহ তিনজনকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। তাদের আগামী ১ আগস্ট হাইকোর্টে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। রবিবার (২৩ জুলাই) বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন।

একটি জাতীয় দৈনিকে গত ২২ জুলাই ‘সাড়ে তিন মাস পর পেট থেকে বের হলো গজ!’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। রবিবার প্রতিবেদনটি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. শহিদ উল্লা আদালতের নজরে আনার পর রুলসহ হাইকোর্ট ওই আদেশ দেন। পরে শহিদ উল্লা জানান, প্রতিবেদনটি উপস্থাপনের পর ওই ঘটনার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন, বরিশাল মেডিক্যালের গাইনি বিভাগের প্রধান ও বাউফলের নিরাময় ক্লিনিকের মালিককে ১ আগস্ট তলব করেছেন হাইকোর্ট।

একইসঙ্গে ওই ঘটনায় কেন সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ আনা হবে না তা জানতে রুল জারি করেছেন আদালত। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকসহ ৯ জনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

ওই পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়,‘অস্ত্রোপচারের সাড়ে তিন মাস পর বরিশালে মাকসুদা বেগম নামের এক নারীর পেট থেকে গজ বের করা হয়েছে। মুমূর্ষু অবস্থায় ওই নারীকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে। চিকিৎসকেরা বলেন, দীর্ঘদিন পেটের ভেতর গজ থাকায় খাদ্যনালীতে অনেকগুলো ছিদ্র হয়ে গেছে। গত বৃহস্পতিবার মাকসুদা বেগমের অবস্থার অবনতি হলে তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। মাকসুদা বাউফলের বিলবিলাস গ্রামের মো. রাসেল সরদারের স্ত্রী। গত মার্চে অস্ত্রোপচার করে মাকসুদা একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। তখন তার পেটে গজ রেখেই সেলাই করেন চিকিৎসক।

মাকসুদার মা রোকেয়া বেগম বলেন, গত মার্চে সন্তান প্রসবের জন্য মাকসুদাকে বাউফলের নিরাময় ক্লিনিকে নেওয়া হয়। অস্ত্রোপচার করে মাকসুদার একটি মেয়ে হয়। কয়েক দিন ক্লিনিকে থাকার পর তারা বাড়ি ফেরেন। এক মাস পর মাকসুদা পেটে তীব্র ব্যথা অনুভব করায় আবারও ওই ক্লিনিকে যান। চিকিৎসকেরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ওষুধ দিয়ে ব্যথা কমানোর চেষ্টা করেন। দুই মাস পর খিঁচুনি দিয়ে জ্বর ওঠে তার। খাওয়াদাওয়াও বন্ধ হয়ে যায়। গত জুনে বরিশাল মেডিক্যালের বহির্বিভাগে তাকে দেখানো হয়। তখন আলট্রাসনোগ্রাফিতেও কিছু ধরা পড়েনি। এরপর পটুয়াখালীতে এক চিকিৎসককে দেখানোর পর তিনি বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মাকসুদাকে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন। ১২ জুলাই হাসপাতালে মাকসুদার অস্ত্রোপচার হয়। তখন তার পেটের ভেতর থেকে গজ বের করা হয়।

এমটি/এএম