কোরবানির পশুবাহী ট্রাক না থামাতে পুলিশকে নির্দেশ আইজিপির

পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় আইজিপিবন্যাদুর্গত এলাকায় কোরবানি ও গৃহপালিত পশুর নিরাপত্তায় কমিউনিটি পুলিশকে কাজে লাগানোর নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক।সুনির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ ছাড়া মহাসড়কে কোরবানির পশুবাহী ট্রাক না থামানোর নির্দেশ দেন তিনি।
বুধবার (১৬ আগস্ট) বিকালে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের সম্মেলনকক্ষে ঈদুল আজহা উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় তিনি ওই নির্দেশনা দেন। পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) সহেলী ফেরদৌস স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। সভায় আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে উদযাপনের লক্ষ্যে পুলিশ ব্যাপক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে বলেও জানানো হয়।
সভাপতির বক্তব্যে সভায় আইজিপি বলেন, ‘ঈদুল আজহা উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপনের লক্ষ্যে পুলিশ কর্মকর্তাদের নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে। কোনও ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যাতে কোনও ধরনের অপপ্রচার চালিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে না পারে, সেজন্য সবাইকে সতর্ক ও সজাগ থাকতে হবে।’
আইজিপি বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ ছাড়া মহাসড়কে কোরবানির পশুবাহী ট্রাক থামানো যাবে না। তিনি সড়ক, রেল, নৌপথ, পশুর হাট এবং ঈদ জামাতস্থলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।’
সভায় নির্ধারিত ঘাট ব্যতীত কোরবানির পশু উঠানামা রোধ, পশুর হাটে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন, হাট ইজারাদার কর্তৃক হাসিল হার প্রদর্শন, নির্ধারিত হারের অতিরিক্ত হাসিল আদায় না করা, কোরবানির পশু ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, হাটে জাল নোট শনাক্তকরণ মেশিন স্থাপন এবং যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখা ইত্যাদি বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। কোরবানির পশু পরিবহনে ব্যবহৃত নৌকা ও ট্রাকে চাঁদাবাজি রোধে পুলিশ ও অন্যান্য সংস্থার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবে।
এছাড়া, কোরবানির পশুর কৃত্রিম সংকট সৃষ্টিকারী, অতিরিক্ত হাসিল আদায়কারীসহ কোরবানির পশুর হাটের আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়। ঢাকার পশুর চামড়া যাতে বাইরে না যায় এবং ঢাকার বাইরের চামড়া যাতে সীমান্তমুখী না হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ারও সিদ্ধান্ত হয়।
ঈদে নৌপথে ঘরমুখে যাত্রীদের নিরাপদ ভ্রমণের লক্ষ্যে রাজধানীর সদরঘাট এবং বরিশালে কমিউনিটি নৌপুলিশ নিয়োজিত থাকবে। নৌপথে যাত্রীদের নিরাপত্তা এবং চাঁদাবাজি রোধে নৌপুলিশ ইউনিট অন্যান্য পুলিশ ইউনিটের সহায়তায় চেকপোস্ট স্থাপনসহ টহলের ব্যবস্থা করবে।
জাতীয় ঈদগাহ ময়দানসহ দেশের প্রধান প্রধান ঈদ জামাতস্থলে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নেওয়া হবে। এছাড়া, জেলা ও থানা পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ঈদ জামাতস্থলের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাস টার্মিনাল এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে টহল জোরদার, টিকেট কালোবাজারি ও মহাসড়কে ডাকাতি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সভায় নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠনের কার্যক্রম নিবিড়ভাবে মনিটরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ঈদ জামাতস্থল, লঞ্চ, ট্রেন, বাস এবং মসজিদে জঙ্গিগোষ্ঠীর নাশকতা রোধে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এআইজি (কনফিডেন্সিয়াল) মো. মনিরুজ্জামান ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে পশু পরিবহন ও কোরবানির পশুর হাটের নিরাপত্তা, মহাসড়ক, নৌপথ, রেলপথের নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, ঈদ জামাতস্থলের নিরাপত্তা, বিনোদন কেন্দ্রের নিরাপত্তাসহ সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
সভায় এসবির অতিরিক্ত আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন ও অপারেশনস্) মো. মোখলেসুর রহমান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া, সব পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ, হাইওয়ে, রেলওয়ে, নৌ, ট্যুরিস্ট ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশসহ অন্যান্য ইউনিটের ডিআইজিরা, সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ সুপার, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
/এআরআর/এএম/