রবিবার (২০ আগস্ট) রাজধানীর এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি, ব্র্যাক ও এটিএন বাংলা এর যৌথ আয়োজনে স্কুলশিক্ষার্থীদের এক বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
পরিবহন ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ বুয়েটের অধ্যাপক ড. মো. শামসুল হক বলেন, ‘সড়ক, পরিবহন, নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা ও ব্যবহারী সবারই দায়িত্ব রয়েছে দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করার জন্য। সড়কের পরিকল্পনা হতে হবে বিজ্ঞানভিত্তিক। বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করলে বলা যায়, সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশে কোনও মহাসড়কই নেই।’
সড়কের উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দিয়ে অধ্যাপক ড. মো. শামসুল হক বলেন, ‘মহাসড়কের দুই পাশে সেফটি বেরিয়ার থাকা দরকার। সড়কভিত্তিক উন্নয়ন হলে যানজট থাকবে না, দুর্ঘটনা থাকবে না ও অর্থনৈতিক ক্ষতিও হবে না।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসএ টিভি ও এসএ পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনার জন্য পরিবহন ব্যবস্থাপনা যেমনি দায়ী, তেমনি সড়ক ব্যবস্থাপনার দুর্বলতাও দায়ী।’ তবে তিনি সড়ক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ঘাটতি ও অনিয়মকে প্রধান কারণ হিসেবে মনে করেন।
দীর্ঘ জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আগের চাইতে সড়কগুলো প্রশস্ত হয়েছে, কিংবা রাস্তার পাশের বাঁকগুলোও কমেছে। তারপরও সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েই চলেছে।’ এসবের কারণ হিসেবে পরিবহনের চালক ব্যতিরেকে হেলপারের গাড়ি চালানো, মহাসড়কগুলোর পাশে নিরাপত্তা বেস্টনীর অভাব, রাস্তার পাশে পথচারীদের যত্রতত্র চলাফেরা, ওয়েট ব্রিজে ওজন দেওয়ার সময় চাঁদাবাজি, মহাসড়কে ওঠার সংযোগ সড়কের অব্যবস্থাপনা, দূরপাল্লার গাড়িগুলোর জ্যামের সময় পূরণের জন্য দ্রুত গাড়ি চালনা প্রভৃতিকে দায়ী করেন তিনি।
বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘প্রতিদিনই সড়ক দুর্ঘটনার নির্মম বলি হচ্ছে সাধারণ মানুষ। বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, দোষী চালকদের শাস্তি না হওয়া, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, মহাসড়কে নসিমন-করিমনসহ ব্যাটারিচালিত ধীরগতি ও দ্রুত গতির যান একসঙ্গে চলাচল, অপ্রতুল ও ত্রুটিপূর্ণ সড়ক, মহাসড়কে বিভাজন না থাকা, পথে পথে চাঁদা আদায়, অপরিকল্পিত টোল ব্যবস্থাপনা, পরিবহনের ওজন মাপার নামে বিশৃঙ্খলা, এসবই সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধির প্রধান কারণ। এছাড়া বিআরটিএর অসাধু কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজসে কিছু পরিবহন মালিক মেয়াদউত্তীর্ণ ও চলাচলের অনুপোযোগী গাড়ি রাস্তায় চালাচ্ছে। যাদের রোড পারমিট নেই, চালকের লাইসেন্স থাকে না ইত্যাদি বিভিন্ন অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এর থেকে পরিত্রাণের জন্যে চালক-মালিক এবং রোড ট্রান্সপোর্ট কর্তৃপক্ষসহ সবাইকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।’
বিতর্ক প্রতিযোগিতায় টাঙ্গাইলের বাঘিল কে কে উচ্চ বিদ্যালয়কে পরাজিত করে বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জের রাশেদ খান মেনন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় বিজয়ী হয়। বিজয়ী দলের বিতার্কিকরা হলেন— লামিয়া আক্তার, ফারিয়া জান্নাত জেরিন, ও জিন্নুরাইন অথৈ। প্রতিযোগিতা শেষে শ্রেষ্ঠ বক্তা ও বিজয়ীদের পুরস্কার দেওয়া হয়।
/আরজে/এসএমএ/