শুক্রবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে সংগঠনের দুই বছর পূর্তি ও নতুন কমিটি গঠন উপলক্ষে এ স্মরণিকা সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এসময় ওমর ফারুক স্মরণে শোক জানানো হয়।
কর্মজীবনে দৈনিক সমাচার, দৈনিক রুপালি, দৈনিক আজকের কাগজ, দৈনিক যুগান্তর ও বাংলা ট্রিবিউনে কাজ করেছেন ওমর ফারুক। তিনি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির স্থায়ী সদস্য। তার নেতৃত্বেই নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম, বাংলাদেশ গঠিত হয়। সংগঠনের দায়িত্বে থাকাকালে বিভিন্ন গণমাধ্যমে নগর বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের নগর ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য দেশ ও দেশের বাইরের বিভিন্ন শহর ভ্রমণের আয়োজন করেছিলেন তিনি। তাকে উৎসর্গ করেই ‘ঢাকাই’ নামে ৪৮ পৃষ্ঠার একটি স্মরণিকাটি প্রকাশ করে তার হাতেই গড়া সংগঠন নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম।
স্মরণিকাতে নগর বিটে কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীরা ওমর ফারুককে নিয়ে বিভিন্ন স্মৃতিচারণ করে প্রবন্ধ, কবিতা ও ভ্রমণ কাহিনীসহ বিভিন্ন ধরনের লেখা লিখেছেন। তাকে স্মরণ করে দৈনিক খোলা কাগজের সিনিয়র রিপোর্টার তোফাজ্জল হোসেন লিখেছেন, ‘মালাক্কা ভ্রমণ বৃথা যায়নি’। এতে তিনি ওমর ফারুকের নেতৃত্বে বিটের সাংবাদিকদের মালয়েশিয়া সফরের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
ভ্রমণ করতে পছন্দ করতেন ওমর ফারুক। তারই অংশ হিসেবে নগর বিটের গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে দ্বীপপুঞ্জে ভ্রমণের ইচ্ছা ছিল তার। কিন্তু তা আর হলো না। তার সেই পরিকল্পনার কথা জানিয়ে যমুনা নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের বিশেষ প্রতিনিধির লেখার শিরোনাম ‘আন্দামান ট্যুর হলো না’।
বিপদ বা হতাশার মুহূর্তে প্রায়ই সাহস জোগাতেন ওমর ফারুক। সেই কথা স্মরণ করেই তার একটি উক্তি দিয়ে শিরোনাম সাজিয়েছেন ডেইলি স্টারের সিনিয়র রিপোর্টার হেলিমুল আলম। তিনি লিখেছেন ‘ধূর মিয়া, কোনও চিন্তা করবা না’।
ওমর ফারুককে স্মরণ করে নয়া দিগন্তের সিনিয়র রিপোর্টার ফয়েজ উল্যাহ ভূঁইয়া লিখেছেন ‘তার কণ্ঠ কানে বাজে’। একজন সাংবাদিকই নয়, ফারুক ছিলেন দক্ষ ফটোগ্রাফারও। সেই কথা স্মরণ করেই দৈনিক সংগ্রামের সিনিয়র রিপোর্টার শাহেদ মতিউর লিখেছেন ‘নামফলকের সাথে ছবি তোলার আইডিয়া’।
ওমর ফারুকের সঙ্গে কর্মজীবনের একটি স্মৃতি তুলে ধরে বাংলা ট্রিবিউনের স্টাফ রিপোর্টার শাহেদ শফিক লিখেছেন ‘মেয়রের কাছে তিনিই আমাকে নিয়ে গিয়েছিলেন’।
ভালো রিপোর্টের জন্য প্রায়ই সহকর্মীদের পরামর্শ দিতেন তিনি। সেই কথাই লিখেছেন দৈনিক ভোরের ডাকের স্টাফ রিপোর্টার সাইদুল ইসলাম। লিখেছেন ‘তার পরামর্শে রিপোর্ট করে পুরস্কারও পেয়েছি’। ফারুকের সঙ্গে বিভিন্ন স্মৃতি তুলে ধরে বাংলাদেশ টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার মাসুদ রানা লিখেছেন ‘স্মৃতিতে অম্লান প্রিয় ফারুক ভাই’।
স্মরণিকাতে বাবাকে স্মরণ করে লিখেছেন প্রয়াত সাংবাদিক ওমর ফারুকের ছোট মেয়ে দিপিকা ওমর দিয়া। তিনি লিখেছেন, ‘আমার পার্সনাল ফটোগ্রাফার’। তার বড় মেয়ে লিখেছেন, ‘একজন আদর্শ বাবা’। লিখেছেন ওমর ফারুকের ভাতিজি ফারহানা রশিদও। তার লেখার শিরোনাম ‘আমার ছোট কাকা’।
দৈনিক সমকালের স্টাফ রিপোর্টার সাজিদা ইজলাম পারুল লিখেছেন ‘ক্ষুদে বার্তায় বদলে যায় মুহূর্ত’। ওমর ফারুকের নেতৃত্বে হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপে ভ্রমণে যায় নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম। সেই ভ্রমণের বিভিন্ন ছবিসহ দৈনিক যুগান্তরের সিনিয়র রিপোর্টার মতিন আব্দুল্লাহ লিখেছেন, ‘সে রাতে ওরা নাকি হরিণের পাল দেখেছিল’।
এই প্রথিতযশা সাংবাদিককে স্মরণ করে শুধু স্মরণিকা নয়, মৃত্যুর পর তার পরিবারের পাশেও দাঁড়িয়েছে তার নেতৃত্বে গড়ে ওঠা নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম। তার পরিবারকে সহযোগিতা দেওয়াসহ রেখে যাওয়া দুই মেয়ের পড়ালেখার জন্য সংগঠনের পক্ষ থেকে দু’টি শিক্ষাবৃত্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে।