বাংলাদেশ মানবিক দেশ বলেই রোহিঙ্গারা আশ্রয় পাচ্ছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ওয়ান হেলথ বাংলাদেশের নবম সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রীমিয়ানমার নিজ দেশের রোহিঙ্গা নাগরিকদের ওপর নিষ্ঠুরতা চালালেও বাংলাদেশ মানবিক দেশ বলেই তাদের আশ্রয় দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনামন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের নিজস্ব অনেক সমস্যা রয়েছে। তারপরও প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, প্রয়োজনে আমরা খাবার ভাগ করে খাবো, তবুও রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাবো না। আমাদের এই মানবিক আচরণের কারণেই রোহিঙ্গারা আশ্রয় পেয়েছে, খাবার পাচ্ছে, চিকিৎসা পাচ্ছে।’
রবিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ওয়ান হেলথ বাংলাদেশের নবম সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এসব কথা বলেন।
কক্সবাজারের সীমান্ত অঞ্চলে গিয়ে রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দুর্ভোগ নিজ চোখে দেখে এসেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। সেই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কী করে একটা দেশের সরকার তাদের নিজেদের নাগরিকদের এভাবে হত্যা করতে পারে! বৃদ্ধ নারী থেকে শিশু— কেউ রক্ষা পাচ্ছে না তাদের নিষ্ঠুরতা থেকে। এসব ভেবে আশ্চর্য হই। কিন্তু আমরা তো তাদের মতো নিষ্ঠুর হতে পারিনি। তাদের আশ্রয়, খাবারের পাশাপাশি চিকিৎসা সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘কয়েক হাজার সন্তানসম্ভবা নারী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আমাদের কষ্ট করতে হবে। তবে যুক্তরাষ্ট, জাতিসংঘ, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোসহ সবাই এগিয়ে এসেছে তাদেরকে সহযোগিতা করার জন্য। ভারত এবং চীনও মানবিক সাহায্য নিয়ে এগিয়ে এসেছে। আমি বিশ্বাস করি, সমগ্র বিশ্ব জনমত এর বিরুদ্ধে। সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে, চাপ দিতে হবে মিয়ানমারকে। তাদের সরকারকে চাপ দিয়ে নিজ দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে বাধ্য করতে হবে। রোহিঙ্গাদের এই সংকটের সময়ে আশ্রয় দিলেও তাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে দিতে পারবো বলে আশা করছি।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘অত্যন্ত দরিদ্র ও নিরীহ মানুষগুলো খোলা আকাশের নিচে রয়েছে। তবে এরই মধ্যে কয়েকটি ক্যাম্প তৈরি করে আশ্রয়ের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সরকার, স্বাস্থ্য অধিদফতর, ত্রাণ মন্ত্রণালয় একসঙ্গে কাজ করছে, কাজ চলছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে বেশ কয়েকটি মেডিক্যাল টিম কাজ করছে সেখানে। তাদের ওষুধ, ভ্যাকসিনসহ সব ধরনের সহায়তা করা হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনিসেফসহ অনেকেই কাজ করছে সেখানে। তাদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।’