পুরান ঢাকার উন্নয়নে বিভিন্ন দাতা সংস্থার সহায়তায় ‘আরবান ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট ওল্ড ঢাকা’ নামে ওই প্রকল্প গ্রহণ করেছিল রাজউক। এতে পুরান ঢাকার বাবুবাজার থেকে বংশাল পর্যন্ত ১০ দশমিক ২৭ একর জমির ওপর থাকা সব স্থাপনা ভেঙে এলাকাটি নতুন করে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। প্রকল্পে আধুনিক বাণিজ্যিক ও আবাসিক ভবনসহ অন্য নাগরিক সুবিধা সৃষ্টির পরিকল্পনা ছিল। এক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত ছিল, সবার বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভেঙে যার যার সম্পত্তির মূল্য নির্ধারণ করে প্রাপ্য বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
বৈঠকে শুরুতে প্রজেক্ট উপস্থাপন করেন রাজউকের ডেপুটি টাউন প্ল্যানার অ্যান্ড প্রজেক্ট ডিরেক্টর মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রথমে বংশাল এলাকাকে বেছে নেওয়া হচ্ছে। এটি বাস্তবায়িত হলে ৮টি ২৪ তলা ভবন এবং ৬টি কমার্শিয়াল ভবন হবে। এক্ষেত্রে একেকজন ৩টি করে বাণিজ্যিক স্পেস এবং ৩টি করে ফ্ল্যাট পাবেন। এছাড়া স্কুল, খেলার মাঠ, মসজিদ, হেলথ ক্লাব ইত্যাদি থাকবে।’
সভায় প্রকল্পটি নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলেন স্থানীয়রা। এতে পুরান ঢাকার পঞ্চায়েত সদস্য আব্দুল হাই বলেন, ‘আমাদের ভবনে দোকান আছে। তা থেকে ভাড়া পাই। আবার আমাদের ওয়ারিশও আছে। এখন এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে বলা হচ্ছে। সময় লাগবে তিন বছর। এ পুরো সময় আমরা কোথায় থাকবো। যে ভাড়া পাই, সে টাকা কে দেবে। আবার ওয়ারিশরাও কিভাবে তাদের প্রাপ্য পাবেন, এসব নিশ্চিত করতে হবে। এসব যদি না করতে পারেন, তাহলে এই প্রকল্পটি অন্য জায়গায় বাস্তবায়ন করে আগে আস্থা অর্জন করুন।’ এসময় স্থানীয়দের এমন আরও অনেক জিজ্ঞাসার সঠিক কোনও উত্তর দিতে পারেনি রাজউক কর্তৃপক্ষ।
পরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, ‘রাজউকের প্রতি আস্থা না থাকায় কেউ এই প্রকল্প বংশালে চান না। তাই এটি স্থগিত করা হলো। তবে আমরা এ প্রকল্পটি করতে চাই। ইংলিশ রোড, বাবুবাজারের দিকে সাত একর জমি দখলে আছে। আপনারা দখলদার উচ্ছেদে সহায়তা করুন। সেখানেই পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন করবো।’
অনুষ্ঠানের শুরুতে পুরান ঢাকার অবস্থা শোচনীয় উল্লেখ করে একে জাপানের টোকিও ও সিঙ্গাপুরের মতো করা সম্ভব বলে জানান মেয়র সাঈদ খোকন। তিনি বলেন, ‘এক সময় টোকিও এবং সিঙ্গাপুরও পুরান ঢাকার মতো ছিল। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের একত্র করে প্রকল্প নিয়ে নগরকে বসবাসযোগ্য করে তোলা হয়। ঐক্যবদ্ধভাবে চেষ্টা করলে আমারও টোকিও, সিঙ্গাপুরের মতো পুরান ঢাকাকে উন্নত শহরে পরিণত করতে পারব।’