ওষুধ প্রশাসনের বরখাস্ত কর্মকর্তা কিভাবে চাকরিতে বহাল জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট

হাইকোর্টভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে ২৮ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় অদক্ষতা ও অযোগ্যতার অভিযোগে বরখাস্ত হয়েছেন ওষুধ প্রশাসনের কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম। তবুও তিনি কিভাবে চাকরিতে বহাল আছেন তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী সাত দিনের মধ্যে ওষুধ প্রশাসনের মহাপরিচালক (ডিজি ড্রাগ) মেজর জেনারেল মুস্তাফিজুর রহমানকে বিষয়টি ব্যাখ্যা করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এ সংক্রান্ত এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ আদেশটি দেন।
একইসঙ্গে ওই কর্মকর্তার কাজে যোগদানের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আবেদনের পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
গত ২৪ আগস্ট ওষুধ প্রশাসনের দুই কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়। তাদের মধ্যে ওষুধ প্রশাসনের সহকারী পরিচালক শফিকুল ইসলাম তথ্য গোপন করে বরখাস্তের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনাল-১ অনুযায়ী আবেদন করেন। এরপর বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করেন ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে তিনি কাজও শুরু করেন।
অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,‘বিষয়টি জানার পর আদালতে আবেদন করলে মঙ্গলবার হাইকোর্ট তার কাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ট্রাইব্যুনালের আদেশ স্থগিত করেছেন। এছাড়া বরখাস্ত হওয়ার পরও কিভাবে তিনি চাকরি করছেন, সেই বিষয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে ডিজিকে। পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ২৬ অক্টোবর ধার্য করেছেন আদালত।’

২০০৯ সালের জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত সারাদেশে রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে কিডনি নষ্ট হয়ে ২৮ শিশু মারা যায়। এ ঘটনায় ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের পক্ষ থেকে পাঁচ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। বিচার শেষে গত বছরের ২৮ নভেম্বর পাঁচ জনকে খালাস দেন বিচারিক আদালত। এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানির জন্য ওই আপিল গ্রহণ করা হয় গত ৯ মার্চ।

রিটকারী আইনজীবী জানান,২৮ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় আদালতের রায়ে ওষুধ প্রশাসনের দুই কর্মকর্তার অদক্ষতা ও অযোগ্যতা এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে অবহেলার বিষয়টি ওঠে আসে। তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট।

এরপর স্বাস্থ্য সচিবের একটি প্রতিবেদন দেওয়া হয়। এতে বলা হয়— ওই দুই কর্মকর্তাকে সতর্ক করা হয়েছে। অথচ আদালত জানতে চেয়েছিলেন কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পরে সচিব হাজির হয়ে জানান, ওই দুই কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছে।