বিক্ষোভ কর্মসূচি চলাকালে ঢামেক হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে নিজেদের দাবি-দাওয়া উল্লেখ করা ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড হাতে অবস্থান করেন চিকিৎসকরা। তারা জানান, পাঁচ দফা দাবিতে তারা এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন।
চিকিৎসকদের দাবিগুলো হলো— চিকিৎসকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একজন রোগীর সঙ্গে দুই জনের বেশি স্বজন বা ভিজিটরকে প্রবেশ করতে না দেওয়া; ঢামেকের প্রতিটি প্রবেশপথের নিরাপত্তা জোরদার করতে আনসার বাহিনীর পাশাপাশি অন্য কোনও দক্ষ বাহিনীকে নিয়োজিত করা; অবিলম্বে চিকিৎসা সুরক্ষা আইনের বাস্তবায়ন; রবিবার চিকিৎসকের হাত ভেঙে দেওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি ও দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করা এবং আহতদের সুচিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়া।
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে ঢামেক হাসপাতালের ইন্টার্ন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ডা. মোস্তাফিজুর রহমান মুস্তাক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের প্রথম দাবি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে আমরা কর্মক্ষেত্রে ফিরে যাবো না। আমাদের সুরক্ষার জন্য নীতিমাল নির্ধারণ করতে হবে। হাসপাতালের প্রতিটি প্রব্শেপথে আনসার বাহিনীর সঙ্গে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরও যুক্ত করতে হবে।’
রোগীর সঙ্গে থাকা ভিজিটরদের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘একজন রোগীর সঙ্গে দুই জন করে ভিজিটর থাকবেন, তাদের গলায় আইডি থাকতে হবে। একজন রোগীর সঙ্গে পাঁচ-ছয় জন করে ভিজিটর থাকলে চিকিৎসার পরিবেশ নষ্ট নয়। কিছু হলেই তারা চিকিৎসকদের ওপর হাত তোলার মতো সাহস দেখায়। আমরা চাই, হাসপাতালের ভেতরে যেন আনঅথরাইজড কেউ না থাকতে পারে।’
উল্লেখ্য, গত ২৮ অক্টোবর রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ঢামেক হাসপাতালের সিসিইউ-২-তে ভর্তি হন নওশাদ নামের এক রোগী। ২৯ অক্টোবর সকাল ১১টার দিকে তার মৃত্যু হলে এ মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এক পর্যায়ে রোগীর স্বজনরা ডাক্তারদের ওপর চড়াও হন। এসময় তাদের আঘাতে একজন ডাক্তার ও দুই আনসার সদস্য আহত হন। পরে হাসপাতালের ডাক্তার, স্টাফ ও আনসার সদস্যরা মিলে রোগীর স্বজনদেরও মারধর করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঢামেক হাসপাতালের ২ নম্বর ভবনের তৃতীয় তলায় এ ভাঙচুর ও মারধরের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার পর রবিবার দুপুর ২টা ১০ মিনিট থেকে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগ বন্ধ রাখেন চিকিৎসকরা। এর প্রায় তিন ঘণ্টা পর বিকাল ৫টার দিকে ফের চালু হয় জরুরি বিভাগের সেবা।