বিজ্ঞানের অপব্যবহারের দায় সম্পূর্ণ মানুষেরই

অশোক ফেরির (বাঁয়ে) সঙ্গে বিজ্ঞান বিষয়ক আলাপচারিতায় পদার্থবিজ্ঞানী বেলাল বাকীমানুষ বিজ্ঞানকে নিজেদের স্বার্থে ধ্বংসাত্মক কাজে ব্যবহার করলেও এর দায় বিজ্ঞানের নয়, এই দায় কেবল মানুষেরই। আর বিজ্ঞান চর্চা ছাড়া পৃথিবীকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই মানুষের কল্যাণের জন্য যে বিজ্ঞানের উদ্ভব, সেই বিজ্ঞানের চর্চা আরও বাড়াতে হবে। আমাদের দেশে শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞানকে ভয় পেলেও একে মজারভাবে শিক্ষার্থীদের সামনে উপস্থাপন করতে হবে। তাহলে তারাও বিজ্ঞানচর্চায় উৎসাহ পাবে।
শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) ঢাকা লিট ফেস্টের দ্বিতীয় দিনে পদার্থবিজ্ঞানী বেলাল বাকী এসব কথা বলেন। বাংলা একাডেমির ভাস্কর নভেরা হলে শ্রীলংকান কথাসাহিত্যিক অশোক ফেরির সঙ্গে বিজ্ঞান বিষয়ক আলাপচারিতায় তিনি এসব কথা বলেন।
সেশনে বেলাল বাকী বলেন, ‘বিজ্ঞান ধ্বংস করে না, বিজ্ঞান হলো জ্ঞান। এটি চর্চার বিষয়, এটি কেবল মানুষের মঙ্গলের জন্য। মানুষ রাজনীতি ও নিজেদের স্বার্থে বিজ্ঞানকে ব্যবহার করছে। এর ফলে কখনও কখনও বিজ্ঞানকে ধ্বংসাত্মক কাজেও ব্যবহার করা হয়েছে। এর দায় মানুষের, বিজ্ঞানের নয়। বিজ্ঞানের সব আবিষ্কারই হয়েছে মানুষের কল্যাণ ও পৃথিবীর উন্নয়নের জন্য।’
বেলাল বাকী আরও বলেন, ‘বিজ্ঞান পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী বিষয়। বিজ্ঞানচর্চা ছাড়া পৃথিবীর কোনও দেশের অগ্রগতি সম্ভব না।’ তিনি বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদেরকেও বেশি বেশি বিজ্ঞান চর্চার প্রতি আহ্বান জানান।
সবসময়ই বিজ্ঞানের ভালো দিকগুলোর সঙ্গে থাকার বিকল্প নেই বলে জানান এই বিজ্ঞানী। অশোক ফেরির বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেওয়ায় পাশাপাশি তিনি ব্যক্তিগত বিভিন্ন তথ্যও তুলে ধরেন। জানান, ছোটবেলা থেকেই বিজ্ঞানে আগ্রহ ছিল তার। বিজ্ঞানকে ভয় পাওয়ার কারণ নেই উল্লেখ করে তিনি একে সবচেয়ে মজার বিষয় বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ‘বিজ্ঞানকে মজাদার করে শিক্ষার্থীদের সামনে তুলে ধরতে পারলে তারা বিজ্ঞানে আগ্রহী হবে। তখন তারা বিজ্ঞানকে আর ভয় পাবে না।’
বিজ্ঞানে আগ্রহী দর্শক-শ্রোতা ও বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে প্রাণবন্ত এই সেশনে তিনি সংখ্যা, শূন্য সংখ্যা, এনট্রপি, কোয়ান্টমসহ পদার্থবিজ্ঞান ও গণিতের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন এবং দর্শকদের প্রশ্নের জবাব দেন।
এক প্রশ্নের উত্তরে বেলাল বলেন, ‘গণিত মানুষের মস্তিষ্কের ভাষা। মহাজাগতিক বিষয়গুলোও এই ভাষা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এই দুইটি বিষয় দিয়েই বিজ্ঞানের সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি হয়েছে। বিজ্ঞানের বেশিরভাগ আবিষ্কারের পেছনেই গণিতের ব্যাপক অবদান রয়েছে।’