সেশনের শুরুতেই লিওনেল শ্রিভারকে নিয়ে হাজির হন কাজী আনিস আহমেদ। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এই সেশনে কাজী আনিসের সঙ্গে আলাপচারিতায় শ্রিভার তুলে ধরেন তার সাহিত্য সৃজনের সংকট ও অনুপ্রেরণা নিয়ে।
শ্রিভারের পরিচয় দিতে গিয়ে কাজী আনিস বলেন, লিওনেল শ্রিভারের লেখা একইসঙ্গে রাজনৈতিক এবং বহু স্তরবিশিষ্ট। তারই লেখা জনপ্রিয় ‘উই নিড টু টক অ্যাবাউট কেভিন’ বইয়ের নামের সঙ্গে মিল রেখেই সেশনের নামকরণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। আর শুরুতেই নিজের লম্বা ক্যারিয়ার প্রসঙ্গে শ্রিভার বলেন, ‘‘পৃথিবীতে অসংখ্য লেখক আছেন যাদের পাঠক নেই। ক’দিন আগে আমিও তাদের দলে ছিলাম। ভাগ্যক্রমে, আমার বই ‘উই নিড টু টক অ্যাবাউট কেভিন’ পাঠকপ্রিয়তা অর্জন করলে আমার দলও বদল হয়।’’
কাজী আনিস আহমেদ জানতে চান, এমন জ্বলজ্যান্ত রাজনৈতিক উপাখ্যান শ্রিভার কিভাবে লেখেন? উত্তরে তিনি বলেন, ‘কেবল নিজের সময়ের রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ তুলে না ধরে রাজনৈতিক ঘটনাকে কালজয়ী ঘটনার প্রতীকে হাজির করতে হবে।’ বিভিন্ন সন্ত্রাসী ঘটনার উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি কনসার্টে গুলি চালিয়ে মানুষ খুন করছে, সেই ব্যক্তি রাস্তায় জনসভার ওপর দিয়ে ট্রাক চালিয়ে দিচ্ছে। আবার সেই ব্যক্তিই স্কুলে বাচ্চাদের গুলি করে মারছে। আসলে সন্ত্রাসের চরিত্র একই রকম। এভাবে অনেকগুলো ঘটনার একটি সাধারণ ছাঁচ বা প্রতীক তৈরি করা যায়। আর তাতেই রাজনৈতিক উপাখ্যান হয়ে ওঠে কালজয়ী।’
রাজনীতি ও সমাজনীতির সবচেয় ঘনিষ্ঠ অনুঘটক হলো অর্থ। এ প্রসঙ্গেও নিজের মতামত ও ধারণা তুলে ধরেন শ্রিভার। তিনি বলেন, ‘অর্থ অনেকটা বিশ্বাসের মতো ব্যাপার। ধর্মের মতোই এর আচরণ। এবং ধর্মশাস্ত্র অনুযায়ী লোকে যেভাবে মহাপ্রলয়ের ভয়ে ভীত, তেমনি একটি অর্থনৈতিক ডিস্টোপিয়ার ভয়েও মানুষজন সবসময় সন্ত্রস্ত থাকে।’
আলাপচারিতার শেষের দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রসঙ্গও উঠে আসে। এসময় ট্রাম্প প্রশাসনের ব্যঙ্গাত্মক সমালোচনা করেন লন্ডন প্রবাসী এই মার্কিন লেখিকা।
আলোচনা শেষে উপস্থিত দর্শকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবও দেন লিওনেল শ্রিভার।