ভুলে ভরা প্রশ্নপত্রটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এটি নিয়ে চলছে ব্যাপক সমালোচনাও। এ প্রশ্নপত্রের ১, ২, ৪, ৯, ১১, ১৭, ২৩, ২৮, ৩৭, ৩৮ নং প্রশ্নসহ অন্তত ২০টি বাক্য এবং বেশ কয়েকটি বানান ভুল রয়েছে। এছাড়া, অনেক প্রশ্নই পঞ্চম শ্রেণির শিশুর জন্য উপযুক্ত নয় বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষক ও অভিভাবকরা।
এক অভিভাবক তার ফেসবুক ওয়ালে প্রশ্নপত্রটি পোস্ট করে লিখেছেন, “আমার মেয়েটা একটু আগে PSC পরীক্ষা দিয়ে আসলো। কষ্ট করে শুধুমাত্র প্রশ্নগুলো পড়ুন। উত্তর পড়ার দরকার নাই। চিন্তাও করা যায় না, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রশ্নকর্তারা ক্লাস ফাইভের একটা প্রশ্ন ইংরেজিতে করতে পারেন না। আর আমাদের শিক্ষামন্ত্রী গলা ফাটিয়ে চিৎকার করছেন, লেখাপড়ার মান অনেক বৃদ্ধি পাইছে....!!।”
ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষার সমালোচনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক রেবেকা হক। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘প্রশ্নপত্রে কেন ভুল থাকবে? এটা কিভাবে সম্ভব? বানান কেন ভুল থাকবে? কাদের দিয়ে এসব প্রশ্ন করানো হয়? প্রশ্নগুলো কি আদৌ মডারেট হয় না? এ ধরনের ভুল কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’
প্রশ্নপত্রটির ৩৮ নম্বর প্রশ্নে বলা হয়েছে, “যদি তোমার সামনেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তোমার বাবাকে ধরে নিয়ে চলে যায় তখন তোমার কি করা উচিত বলে মনে করো?” এই প্রশ্নের উত্তরের চারটি অপশনে বলা হয়েছে, “তুমি লুকাবে?”, “তুমি কাঁদবে?” “তুমি বাধা দেবে?” “তুমি মুক্তিযোদ্ধাদেরকে জানাবে?”
এই ধরনের প্রশ্ন পঞ্চম শ্রেণির বাচ্চাদের জন্য কেন করা হবে–এমন প্রশ্ন রেখে ঢাবির অধ্যাপক রেবেকা হক বলেন, ‘এসব প্রশ্ন করার মধ্য দিয়ে প্রশ্নকর্তারা কি বোঝাতে চান? তারা কি কাউকে খুশি করতে চান? তাদের স্বার্থ হাসিলেও শিশুদের ব্যবহার করা হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের এসব কী শেখাচ্ছি। আমরা রীতিমতো হতাশ হয়ে পড়ি। আমি প্রাথমিকের কথাই বা কেন বলছি? বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়েও তো এই ধরনের ঘটনা ঘটছে।’
ভুলে ভরা প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়ে কথা বলতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. আবু হেনা মুস্তফা কামালের সঙ্গে কথা বলতে চেয়ে ফোন করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।