পোপ থাকবেন ভ্যাটিকান রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে, নিরাপত্তায় এসএসএফ

পোপ ফ্রান্সিস

ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের মূল নিরাপত্তায় থাকবে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ)। এর বাইরে পুলিশসহ বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন।

বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) বিকাল তিনটায় ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস তিন দিনের সফরে বাংলাদেশে আসছেন। তিনি এসময় ভ্যাটিকান রাষ্ট্রদূত জর্জ কুচেরির বারিধারার বাসভবনে থাকবেন। এরইমধ্যে ওই বাড়িটিকে ঘিরে পুলিশ গড়ে তুলেছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয়।

ঢাকা মহানগর পুলিশের কূটনৈতিক জোনের উপ-কমিশনার জসিম উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস থাকবেন ভ্যাটিকান রাষ্ট্রদূত জর্জ কুচেরির বাসভবনে। এরইমধ্যে আমরা ওই বাসভবনটি আমাদের নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে নিয়েছি। বাসভবনের ছাদেও থাকবে নিরাপত্তা। আশেপাশের সড়কগুলোতে তল্লাশি চৌকি বসানো হয়েছে। পাশের লেকে স্পিড বোটের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক টহল থাকবে । এছাড়া, পুলিশের আরও কিছু বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। ’

সংশ্লিষ্টরা জানান, সফর শেষে আগামী ২ ডিসেম্বর পোপ ফ্রান্সিস ঢাকা ছেড়ে যাবেন। তার সফরকে কেন্দ্র করে পুলিশ সদর দফতর ও ঢাকা মহানগর পুলিশ সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। তার থাকার বাসভবন ছাড়াও তিনি যেসব স্থানে যাবেন এবং সভা করবেন, সেসব পথকে ঢেকে দেওয়া হবে নিরাপত্তার চাদরে।

পোপের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে গত ২২ নভেম্বর পুলিশ সদর দফতর ও গত ২৬ নভেম্বর ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সদর দফতরে দু’দফা সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পোপের সফর উপলক্ষে নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে ওই সভায় বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

পুলিশ সদর দফতরের জনসংযোগ বিভাগের এআইজি সহেলী ফেরদৌস বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, পোপ ফ্রান্সিস বিশ্বের অন্যতম একজন সম্মানীয় ব্যক্তি। তার বাংলাদেশ সফর আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের। পোপের সফর যাতে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়, সেজন্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সফরের সবগুলো ভেন্যু এবং ভিভিআইপি চলাচলের সময় পোশাকে এবং সাদা পোশাকে পুলিশ এবং র‌্যাব সদস্যরা মোতায়েন থাকবেন।

ডিএমপি’র জনসংযোগ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, পোপের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে গত ২৬ নভেম্বর ডিএমপির সদর দফতরে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পারস্পরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।

মাসুদুর রহমান বলেন, ‘পোপের সফরের সব ভেন্যু, হোটেল ও বিমানবন্দরে থাকবে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বিভিন্নস্থানে যাওয়া-আসার সময় পোশাকে ও সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্যরা মোতায়েন থাকবেন। অতিরিক্ত নিরাপত্তার প্রয়োজনে স্ট্যান্ডবাই থাকবে সোয়াট ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট।’

বাংলাদেশে পোপের সফর উপলক্ষে খ্রিস্টান সম্প্রদায় নিজেরাও একটি নিরাপত্তা ও স্বেচ্ছাসেবক কমিটি গঠন করেছে। কমিটির আহ্বায়ক নির্মল রোজারিও এবং খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা পুলিশ সদর দফতর ও ডিএমপি সদর দফতরের সমন্বয় সভাগুলোতে উপস্থিত ছিলেন। পোপের আগমন সফল করতে আগত বিদেশি অতিথিদের জন্য নির্ধারিত হোটেল, সম্মেলনস্থলসহ প্রত্যেকটি ভেন্যু সুইপিংসহ সিসি ক্যামেরা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। আর্চওয়ে স্থাপন এবং পুরুষের পাশাপাশি নারী স্বেচ্ছাসেবক থাকবেন। আবাসস্থল ও যাতায়াত রাস্তার নিরাপত্তা ব্যবস্থা, রুফটপ ও মোবাইল ডিউটি মোতায়েন থাকবে।