রাজধানীর ঢাকার কুড়িল থেকে পূর্বাচলের পথে ৩০০ ফুট সড়ক হিসেবে পরিচিত এক্সপ্রেসওয়েতে যান চলাচলে বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে ‘ওভার স্পিড’র মামলা দিচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ।
ট্রাফিক পুলিশ বলছে, এই পথে প্রায় প্রতিদিনই সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটছে। বিশেষ করে অতিরিক্ত গতির কারণে বেপরোয়া হয়ে উঠছে মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকার-চালকরা। তাই সড়কে বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে স্পিড মিটারের মাধ্যমে ‘ওভার স্পিড’ মামলা দেওয়ায় দুর্ঘটনা কমছে।
সম্প্রতি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান সড়কের বিশৃঙ্খলা ফেরাতে ও যানবাহনের অতিরিক্ত গতি নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের বিশেষ নির্দেশনা দেন। এরপর থেকে সড়কে ওভার স্পিড ও ট্রাফিক আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগ।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) ডিএমপি গুলশান ট্রাফিক বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) আব্দুল মোমেনের নেতৃত্বে ৩০০ ফুট শেখ হাসিনা সরণীতে অভিযান চালায় বাড্ডা ট্রাফিক জোন। এদিন সকাল থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত চালানো অভিযানে প্রায় শতাধিক গাড়িকে গতির নিয়ন্ত্রণে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। এ সময় অতিরিক্ত গতির (ওভার স্পিড) কারণে ২০টি গাড়িসহ ট্রাফিক আইন ভাঙার অভিযোগে মোট ৩৪টি যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়।
এ সড়কের বিভিন্ন স্থানে ব্যারিকেড বসিয়ে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে অংশ নেওয়া ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা বলছেন, গত কয়েকদিনের চলমান অভিযানে সড়কে কিছুটা শৃঙ্খলা ফিরেছে। বিশেষ করে ওভার স্পিডের বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেওয়া হচ্ছে।
বাড্ডা ট্রাফিক জোনের ট্রাফিক পরিদর্শক (টিআই) মো. দেলোয়ার হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘‘ডিসি ট্রাফিক গুলশান স্যারের নির্দেশে ৩০০ ফুট সড়কে প্রতিদিন অভিযান চালানো হচ্ছে। যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণে স্পিড মিটারের মাধ্যমে তদারকি করা হচ্ছে। কোনও গাড়ির অতিরিক্ত গতি থাকলে সঙ্গে সঙ্গে তার বিরুদ্ধে ‘সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ট্রাফিকের অন্যান্য শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে জরিমানা ও মামলা দেওয়া হচ্ছে।’’
টিআই আরও বলেন, ‘আমরা ট্রাফিক গুলশান বিভাগ সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি— ৩০০ ফুটের ট্রাফিক শৃঙ্খলা ধরে রাখতে।’
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ৩০০ ফুট সড়কে গাড়ি ও মোটরসাইকেল নিয়ে প্রতিযোগিতা, উল্টো পথে চলাচল, অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানোর অভিযোগে এই অভিযান চালানো হচ্ছে। গত ৮ মে থেকে ১৫ মে পর্যন্ত এ সড়কে ওভার স্পিডের কারণে ৬২টি ও ট্রাফিক আইন অমান্য করার অভিযোগে ১৪৪টি মামলা হয়েছে।
এ বিষয়ে ট্রাফিক গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) আব্দুল মোমেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘চলমান এ অভিযানের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে— ৩০০ ফুট সড়ক বা এক্সপ্রেসওয়েতে বিশৃঙ্খলা রোধ করতে মানুষকে সতর্ক করা। আমরা জরিমানা বা মামলা দেওয়া চেয়ে সবাইকে সতর্ক ও সচেতনের দিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।’
গত কয়েকদিনের অভিযানে এ সড়কে দুর্ঘটনা কমেছে উল্লেখ্য করে ডিসি আরও বলেন, ‘ওভার স্পিডের কারণে যানবাহনের বিরুদ্ধে ট্রাফিক আইনে মামলা করার কারণে দুর্ঘটনা কমার পাশাপাশি অনেক শৃঙ্খলা ফিরেছে। তবে বেশিরভাগ সময় অল্প বয়সের ছেলে-মেয়েরাই অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালায়। এজন্য অভিভাবকদের বেশি সতর্ক হতে হবে। সন্তানরা কোথায় যাচ্ছে কী করছে, এ ব্যাপারে সতর্কতা বাড়ানোর পাশাপাশি সবারই ট্রাফিক আইন মেনে চলা উচিত।’