এবার ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’ প্রশ্নপত্র ফাঁস!

ফাঁস হয়েছে এসএসসি’র বালাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় পরীক্ষার বহুনির্বচনী প্রশ্নপত্রও। বামে মূল প্রশ্ন, ডানে হোয়াটস অ্যাপে ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র

এবারের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার আগের ১০টি বিষয়ের বহুনির্বচনি অভীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা সত্ত্বেও আবারও একই চিত্র দেখা গেছে বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়টির ক্ষেত্রেও। প্রশ্নফাঁসকারী চক্র এ বিষয়টির বহুনির্বচনি প্রশ্নপত্রও পরীক্ষার এক ঘণ্টা আগে ছেড়ে দিয়েছে ইন্টারনেটে। আজ শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত এ পরীক্ষার প্রশ্নের সঙ্গে ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রের হুবহু মিল পাওয়া গেছে।

এ ব্যাপারে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তপন কুমার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে আমরা নতুন নতুন কোনও পথ খোঁজার চেষ্টায় আছি। মন্ত্রণালয় কাজ করছে।’

এদিকে নানা রকম ব্যবস্থা নেওয়ার পরও প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে পারছে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে গত বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের এক অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসাইন বলেন, ‘বিদ্যমান পদ্ধতিতে প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকানো সম্ভব নয়।’

এসএসসি’র বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় পরীক্ষার প্রশ্নপত্র

তিনি আরও বলেন, ‘পরীক্ষা পদ্ধতির পরিবর্তন নিয়ে ভাবছে সরকার।’

উল্লেখ্য, ১ ফেব্রুয়ারি বাংলা প্রথম পত্রের বহুনির্বাচনি অভীক্ষার ‘খ’ সেট পরীক্ষার প্রশ্ন ও ফেসবুকে ফাঁস হওয়া প্রশ্নের হুবহু মিল ছিল। পরীক্ষা শুরুর একঘণ্টা আগেই তা ফেসবুকে পাওয়া যায়। ৩ ফেব্রুয়ারি সকালে পরীক্ষা শুরুর প্রায় ঘণ্টাখানেক আগে বাংলা দ্বিতীয় পত্রের নৈর্ব্যক্তিক (বহুনির্বচনি) অভীক্ষার ‘খ’ সেটের উত্তরসহ প্রশ্নপত্র পাওয়া যায় ফেসবুকে। যার সঙ্গে অনুষ্ঠিত হওয়া প্রশ্নপত্রের হুবহু মিল পাওয়া যায়। ৫ ফেব্রুয়ারি পরীক্ষা শুরুর অন্তত দুই ঘণ্টা আগে সকাল ৮টা ৪ মিনিটে ইংরেজি প্রথম পত্রের ‘ক’ সেটের প্রশ্ন ফাঁস হয়। এর সঙ্গে অনুষ্ঠিত হওয়া প্রশ্নপত্রের হুবহু মিল পাওয়া গেছে।

৭ ফেব্রুয়ারি বুধবার পরীক্ষা শুরুর অন্তত ৪৮ মিনিট আগে সকাল ৯টা ১২ মিনিটে ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের ‘খ’ সেটের গাঁদা প্রশ্নপত্রটি হোয়াটসঅ্যাপের একটি গ্রুপে পাওয়া গেছে। ৮ ফেব্রুয়ারি হোয়াটসঅ্যাপের একটি গ্রুপে ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষার বহুনির্বচনি অভীক্ষার ‘খ’ সেটের চাঁপা প্রশ্নপত্রটি পাওয়া যায়। ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা ৫৯ মিনিটে হোয়াটসঅ্যাপের একটি গ্রুপে গণিতের ‘খ-চাঁপা’ সেটের প্রশ্নপত্রটি পাওয়া যায়। ১১ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা ৫১ মিনিটে হোয়াটসআপের একটি গ্রুপে আইসিটির ‘ক’ সেট প্রশ্ন পাওয়া যায় এবং সকাল ৯টা ৩ মিনিটে ‘গ’ সেটের প্রশ্নও ফাঁস হয়। ১৩ ফেব্রুয়ারি পরীক্ষা শুরু আগেই পদার্থবিজ্ঞান এবং ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিষয়ের প্রশ্নপত্রও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পাওয়া যায়।

বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় প্রশ্নের ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র

এছাড়াও বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ছিল বিজ্ঞান গ্রুপের রসায়ন, বাণিজ্য গ্রুপের ব্যবসায় উদ্যোগ এবং মানবিক গ্রুপের পৌরনীতি ও নাগরিকতা বিষয়ের পরীক্ষা। পরীক্ষা শুরুর আগে সকাল ৯টা ৫ মিনিটে রসায়নের ‘খ’ সেট প্রশ্নপত্রটি হোয়াটসঅ্যাপের গ্রুপে পাওয়া যায়। এসব ফাঁস হওয়া প্রশ্নের সঙ্গে পরীক্ষা শেষে হাতে পাওয়া প্রশ্নের হুবহু মিল পাওয়া গেছে।