‘উনারা মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন, কেউ আশেপাশে ভিড় করবেন না’

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম (ফাইল ছবি)

স্বাস্থ্যমন্ত্রী মো. নাসিম বলেছেন, নেপালে ইউএস-বাংলার বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আহতদের কয়েকজনকে দেশে এনে সুচিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।  তাদের অবস্থা সম্পর্কে নিয়মিত জানানো হবে। এসময় রোগীদের আশেপাশে ভিড় না করার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।

রবিবার (১৮ মার্চ) দুপুরে সচিবালয়ের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত নেপালের দুর্ঘটনা পরবর্তী সর্বশেষ পরিস্থিতি জানাতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় ৫১ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ২৬ জন বাংলাদেশি, ১৪ জন নেপালি, একজন চীনা নাগরিক। এ দুর্ঘটনার পর পরই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মেডিক্যাল টিম গঠন করে আমরা নেপালে পাঠিয়েছি। তারা সেখানে কাজ করছে। দুর্ঘটনায় আহত কয়েকজনকে দেশে আনা হয়েছে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের (ঢামেক) বার্ন ইউনিটের প্রধান ডা. সামন্ত লাল সেনের নেতৃত্বে একটি মেডিক্যাল টিম তাদের চিকিৎসা করছেন।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ সময় সবার প্রতি অনুরোধ করে বলেন, ‘ আপনারা  কেউ হাসপাতালে রোগীদের আশেপাশে ভিড় করবেন না।  উনারা মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন। উনাদের অগ্রগতি সম্পর্কে আমরা টাইম টু টাইম ব্রিফ করবো।’

ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব সিরাজুল হক, স্বাস্থ্য অধিফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, ডা. সামন্ত লাল সেন এবং তার টিমের ৫ জন চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন।

ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘এখন বাংলাদেশে ৫ জন  চিকিৎসা নিচ্ছেন। তারা হলেন- শাহরিন আহমেদ মুমু (৩০), মেহেদী হাসান সুমন (২৯), সৈয়দা কামরুন নাহার স্বর্ণা (২২), আলমুন নাহার অ্যানি (২২ ) এবং রুবায়েত (৩২)। তারা সবাই ভালো আছেন। শাহিন ব্যাপারী নামে আহত অপর একজনের আজকে দেশের আসার কথা। হয়তো  ইতোমধ্যেই চলে এসেছেন। তিনিও ডিএমসিতে ভর্তি হবেন।’ ডিজি বলেন, ‘ আহতদের মধ্যে দুইজন বাংলাদেশি নাগরিক এখন সিঙ্গাপুর আছেন। তারা হলেন ডা. রেজওয়ান ও ইমরানা কবীর। গতকালই তারা নেপাল থেকে সিঙ্গাপুর গেছেন। আর ইয়াকুব আলী নামে একজনকে দিল্লির অ্যাপোলো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। রোগীদের আত্মীয় স্বজনদের ইচ্ছায়ই তাদের বিদেশে নেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, নিহত ২৬ জন বাংলাদেশির মধ্যে ১৭ জনকে শনাক্ত করা গেছে। বাকি ৯ জনকে ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে শনাক্ত করা হবে। আগামীকাল সোমবার থেকেই দেশে  লাশ আসবে। তবে কখন কতজনের লাশ আসবে তা এখনও নিশ্চিত নই। লাশ আনার ব্যবস্থা ইউএস-বাংলা করছে। তবে একসঙ্গে ১৫টির বেশি লাশ আনার সক্ষমতা ইউএস-বাংলার নাই। সেক্ষেত্রে তারা সেনাবাহিনীর সঙ্গে কথা বলছে। তবে লাশ ফেরত আনার বিষয়টি নেপালের অনেক কিছুর ওপর নির্ভরশীল। সেখানে বাংলাদেশ হাই কমিশন ভালো কাজ করছে।’
ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন,  ‘বাংলাদেশে ফেরত আসা সব রোগী ভালো আছেন এবং স্থিতিশীল আছেন। যেহেতু হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র  না দেওয়া পর্যন্ত আমরা কাউকেই শঙ্কামুক্ত বলি না। সেহেতু তারা কেউই শঙ্কামুক্ত নন।’