এ আদেশ নজিরবিহীন: জয়নুল আবেদীন

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেওয়া হাইকোর্টের জামিন স্থগিত করে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল গ্রহণের আদেশকে নজিরবিহীন বলে মন্তব্য করেছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। তিনি বলেন, ‘এই আদেশকে আমরা নজিরবিহীন বলতে বাধ্য হচ্ছি এই কারণে যে অতীতে এ ধরনের আদেশ দেশের সর্বোচ্চ আদালত দেয়নি।’

সোমবার আপিল বিভাগ থেকে বেরিয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘আজকে জাতির উদ্দেশে বলতে চাই, এটা একটা অনভিপ্রেত আদেশ। দেশের সর্বোচ্চ আদালত আজকে যে আদেশটি দিলেন, এতে আমরা খুব মর্মাহত হয়েছি। আমরা মনে করি, এটা নজিরবিহীন আদেশ হয়েছে। অতীতে পাঁচ বছরের সাজায় আপনারা (বিচারপতিরা) যে জামিন দিয়েছেন, সেগুলোর এখন কী হবে? তার কোনও উত্তর আদালত দেননি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি (আদালতকে), অতীতের নজির বলে যে জামিন আবেদনের শুনানি কখনও মেরিটে (মামলার মূল বিষয়বস্তুর ওপর শুনানি) যায় না। আদালত আমাদের কথাও শুনলেন এবার। আগেরবার আমাদেরকে শুনেননি। কিন্তু আজকে যে আদেশ দিলেন, আদেশে বললেন, উনারা (বিচারপতিরা) সবাই মিলে এই আদেশটি দিয়েছেন। প্রথমে ২২ মে মামলাটি শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করলেন। পরে ৮ মে তারিখ নির্ধারণ (রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের আপিল) করেন।’

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও খালেদা জিয়ার এই আইনজীবী আরও বলেন, ‘‘প্রথমে আমরা বুঝতেই পারলাম না কী আদেশ দিলেন। আমি মাননীয় আদালতকে বললাম, মাননীয় আদালত দেশের সর্ব্বোচ্চ আদালত। লোকজন আসে আপনাদের কাছে বিচার পাওয়ার জন্য। বিচারপ্রার্থী মানুষেরা জানতে চান, কী আদেশ দিলেন? কোন পরিপ্রেক্ষিতে লিভ (লিভ টু আপিল) গ্রহণ করলেন? সেটা তো কেউ জানলো না। বারের (সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি) পক্ষে এটা আমার জানার অধিকার আছে, বারের সদস্যদের জানাবার অধিকার আছে। তখন আদালত বললেন, ‘লিভের (লিভ টু আপিল) গ্রাউন্ড (যুক্তি) কী? আমরা এই সব কনভিকশন (সাজা) ইত্যাদি ইত্যাদি কনসিডার (বিবেচনা) করে  দিলাম।’ কিন্তু সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বললেন না (আদালত)। আমি তখন বললাম, আমরা তো মেরিটে কোনও আরগুমেন্ট (যুক্তিতর্ক) এখানে করি নাই। তার কোনও সদুত্তর মাননীয় আদালত আমাদেরকে দেননি। এই আদেশকে আমরা নজিরবিহীন বলতে বাধ্য হচ্ছি এই কারণে, অতীতে এই ধরনের আদেশ দেশের সর্বোচ্চ আদালত দেয়নি।’’

জয়নুল আবেদীন অভিযোগ করে বলেন, ‘নিম্ন আদালতগুলো এই সরকার গ্রাস করে ফেলেছে। উচ্চ আদালতকেও মনে হচ্ছে আস্তে আস্তে গ্রাস করার চেষ্টা করছে। আদালতকে এই জন্য আমি বলেছি, মাননীয় আদালত, দেশের মানুষ আপনাদের কাছে বিচার পাওয়ার আশা নিয়ে আসে, কিন্তু তারা আশাহত হলে এই বিচারপ্রার্থী মানুষের আস্থা থাকবে না। তাই দেশবাসীর উদ্দেশে বলতে চাই, এই আদেশে আমরা মর্মাহত, আমরা ব্যথিত।’