জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ‘স্বচ্ছ ঢাকা’ কর্মসূচি পালন করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কপোরেশন (ডিএসসিসি)। এ কর্মসূচির মাধ্যমে পুরো নগরীকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে সংস্থাটির এ কর্মসূচি চলাকালেই খোদ মেয়রের কার্যালয় নগর ভবনের দু’টি প্রবেশ পথে ময়লার স্তুপ দেখা গেছে। এ থেকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। মেয়রের এমন কর্মসূচির মধ্যে সংস্থাটির এমন দুরাবস্থায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে নগরবাসীর মধ্যে।
নগরভবনের দক্ষিণ পাশের এই সড়কটির একদিকে বঙ্গবাজার, অপরদিকে গুলিস্তান। আর দক্ষিণপাশে পুরনো ঢাকার সিদ্দিকবাজার, বংশাল, নাজিরাবাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ আবাসিক ও ব্যবসায়িক এলাকা রয়েছে। এসব মার্কেটে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা আসেন মালামাল ক্রয়ের জন্য। কিন্তু ময়লা আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হওয়ায় এর পরিবেশ বেহাল হয়ে পড়ে। দৃষ্টিনন্দন বিশাল স্থাপত্য নগর ভবনের প্রবেশ পথের এমন অবস্থায় বিস্মিত নগরবাসী।
এদিকে, সড়কের এই বেহাল অবস্থায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে আশেপাশের মার্কেটগুলোর ব্যবসায়ীরা। তাদের অভিযোগ, রাস্তাটিকে বাস মালিকরা গ্যারেজে পরিণত করেছেন। এ অংশটি ভাসমান মানুষের মলমূত্র ত্যাগের স্থানে পরিণত হয়েছে। নগর ভবনের উদাসীনতাই এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে এ পথ দিয়ে হেঁটে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যাচ্ছিলেন গণমাধ্যমকর্মী সাদ্দাম হোসেন। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, পেশাগত কারণে প্রায়ই এ পথ দিয়েই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যেতে হয়। গুলিস্তান থেকে ফুলবাড়িয়া সুপার মার্কেট অতিক্রম করে নগর ভবনের সীমানায় প্রবেশ করলেই নাক চেপে ধরতে হয়। অনেক সময় বিব্রতকর পরিস্থিতিতেও পড়তে হয়। নগর ভবন সংলগ্ন ফুটপাতে মূত্র ত্যাগ করতে বসে পড়েন অনেকেই। ফুটপাত শেষে সড়কেও এসব মূত্র জমে থাকে। ফলে ওই জায়গা দিয়ে পথচারীদের হাঁটতে বেগ পেতে হয়।
নাজিম উদ্দিন রোডের বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন মামুন বলেন,‘মেয়র স্বচ্ছ ঢাকা কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন। তিনি নিজেকে পরিবর্তনের কথা বলেন। অবশ্যই ভালো উদ্যোগ। কিন্তু তার দফতর এলাকার অবস্থা যদি এমন হয় তাহলে তিনি পুরো নগরকে কীভাবে স্বচ্ছ করবেন? তার কর্মীদের সচেতন হতে হবে।’
নগর ভবনের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, নাগরিকদের সেবা পাওয়ার প্রধান কার্যালয় এই নগর ভান। প্রতিদিন নগরের বিভিন্ন স্থান থেকে নগর ভবনে সেবা নেওয়ার জন্য আসেন শত শত নাগরিক। কিন্তু নগর ভবনে প্রবেশের দু’দিকের চারটি পথের মধ্যে মাত্র একটি পথই খোলা রাখা হয়। আর একটি পথ সংরক্ষিত রাখা হয় নগর পিতা মেয়রের জন্য। এ দুটি পথই নগর ভবনের উত্তর পাশে। অপরদিকে দক্ষিণ পাশের দু’টি পথ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে দক্ষিণ পাশের বাসিন্দাদের দীর্ঘপথ ঘুরে উত্তর গেট দিয়ে নগর ভবনে প্রবেশ করতে হয়। নগর ভবনে প্রবেশের এই দু’টি পথ যদি উন্মুক্ত করে রাখা হতো তাহলে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না বলেও অভিমত অনেক কর্মকর্তার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অতিরিক্ত প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা খন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বিষয়টি আমাদের নলেজে এসেছে। সংশ্লিষ্ট পরিচ্ছন্ন পরিদর্শককে ডেকে সতর্ক করা হয়েছে। পরিষ্কারের কাজ চলছে। রাতের মধ্যেই পুরো এলাকা পরিষ্কার হয়ে যাবে। ঢাকা এখন আগের চেয়ে অনেক পরিষ্কার।’
ছবি: সাইফুল আলম শোভন