নাখালপাড়ায় গৃহকর্ত্রী আমেনা হত্যায় ক্লু পায়নি পুলিশ

 

 



নিহত আমেনা বেগমরাজধানীর পশ্চিম নাখালপাড়ায় গৃহকর্ত্রী আমেনা বেগম হত্যাকাণ্ডে এখনও কোনও আসামিকে শনাক্ত করতে পারেননি তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। ঘটনার ১৮ দিন পার হয়ে গেলেও কোনও ক্লু উদ্ধার হয়নি। তবে হত্যাকাণ্ডটি পরিকল্পিত ছিল বলে ধারণা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

গত ৮ মার্চ দুপুরে তেজগাঁওয়ের পশ্চিম নাখালপাড়ার ‘রসুল ভিলা’য় বাসা ভাড়া নেওয়ার কথা বলে ভেতর ঢুকে গৃহকর্ত্রী আমেনা বেগমকে (৬৫) কুপিয়ে হত্যা করে এক দুর্বৃত্ত। পরে ওই গৃহকর্ত্রীর গলার চেন ও হাতে থাকা স্বর্ণের চুড়ি খুলে নিয়ে যায় হত্যাকারী। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ছেলে রাসেল আহমেদ বাবু বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে তেজগাঁও থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হত্যাকাণ্ডটি সম্পূর্ণ ক্লু-লেস। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত কোনও অস্ত্র ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি। হত্যাকারী চতুরতার সঙ্গে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তারা ধারণা করছেন, হত্যাকারী আগে থেকেই ওই বাড়ি ও বাড়ির মালিক সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেছিল। হত্যাকারী বেশ কয়েকবার ঘটনাস্থল রেকি করেও থাকতে পারে। তবে এ হত্যাকাণ্ডের মূল উদ্দেশ্য কী ছিল, সেটি স্পষ্ট নয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও তেজগাঁও থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. আমিনুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের কোনও ক্লু খুঁজে পাওয়া যায়নি। তদন্ত চলছে, হত্যাকারী শনাক্তে আমরা চেষ্টা করছি।’

তিন বলেন, ‘সব দিক বিবেচনায় রাখা হলেও তদন্তে দুটি বিষয় অধিক গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে— তাদের মধ্যে পারিবারিক কোনও দ্বন্দ্ব ছিল কিনা এবং রাজধানীর দক্ষিণখানের সিরিয়াল কিলিংয়ের সঙ্গে এই ঘটনার কোনও যোগসূত্র আছে কিনা।এটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, “পারিবরিক কোনও দ্বন্দ্বের কারণে এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে কিনা, সেজন্য নিহত আমেনা বেগমের পরিবার ও স্বজনের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সেগুলোর ‘কল ডিটেইলস রেকর্ড’ (সিডিআর) বের করা হয়েছে, সেগুলো তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”

ওই কর্মকর্তা জানান, নিহতের বাড়িতে প্রবেশের গলিতে কোনও সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল না। তবে গলির আশেপাশের কয়েকটি দোকানে সিটিভিভি ক্যামেরা আছে। সেগুলোর মধ্যে একটি দোকানের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে সেখানে স্পষ্টভাবে ঘটনাস্থল কাভার হয়নি। আর বাকি দু-তিনটি পাওয়া গেছে, সেগুলোর কোনও স্টোরেজ নেই।

নিহত আমেনা বেগমের ছোট ছেলে রাসেল আহমেদ বাবু বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রায় সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা এসে আমাদের সঙ্গে কথা বলছেন, তাদের তদন্তে আমরাও সহায়তা করছি। কিন্তু কেউই এখনও হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ জানাতে পারেননি। পশ্চিম নাখালপাড়ায় আমাদের বাড়ির আশেপাশেই সব আত্মীয়-স্বজনেরা থাকেন। আমার মায়ের সঙ্গে কারও কোনও শত্রুতা ছিল না। সবাই মিলে মিশেই থাকতো। ’ তিনি বলেন, ‘আমার মা নামাজি মানুষ ছিলেন। কিন্তু কেন তাকে এভাবে হত্যা করা হলো, বুঝতে পারছি না। আমার মায়ের হত্যাকারীর বিচার চাই।’