কোচিং সেন্টারগুলো শুধু অবৈধ নয় দুর্নীতির আখড়াও: দুদক চেয়ারম্যান

কোচিং সেন্টারগুলো শুধু অবৈধ নয় দুর্নীতির আখড়াও বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। শনিবার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে দুদক সততা সংঘের সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

বক্তব্য রাখছেন দুদক চেয়ারম্যান
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন বাংলাদেশের সব কোচিং সেন্টারগুলো অবৈধ। আমরা বলতে চাই সব কোচিং সেন্টরগুলো শুধু অবৈধ নয় দুর্নীতির আখড়াও। আমরা সরকার, ছাত্র-শিক্ষক, অভিভাবক সবাইকে অনুরোধ জানাই আসুন, এই অবৈধ এবং দুর্নীতিগ্রস্ত কোচিং সেন্টারগুলো বন্ধ করা উদ্যোগ গ্রহণ করি।’

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ আরও বলেন, ‘যেকোনও মূল্যে সম্মিলিতভাবে বাংলাদেশে প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং কোচিং বাণিজ্য চিরতরে বন্ধ করতে হবে। আমাদের সন্তানরা সারাদিন কোচিং সেন্টারে ঘুরে বেড়াবে তা হতে পারে না।’
শিক্ষকদের উদ্দেশে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আপনারাই জাতি গঠনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আপনাদের সুযোগ-সুবিধা, সামাজিক মর্যাদা, বেতন বৃদ্ধিসহ সব উন্নয়নে দুদক আপনাদের পাশে থাকবে। শ্রেণিকক্ষে এমন শিক্ষার ব্যবস্থা করুন যাতে আমাদের সন্তানদের কোচিং সেন্টারে যেতে না হয়। সরকার বেতন বৃদ্ধি করেছে ঠিকই কিন্তু আমরা চাই শিক্ষকদের বেতন-ভাতা, মর্যাদা আরও বৃদ্ধি করা হোক।’

সম্ভাবনাময় তরুণ প্রজন্মকে মানবসম্পদে পরিণত করার তাগিদ দিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘তোমরা এ প্লাস কিংবা ফলাফলের পিছনে না ছুটে পরিপূর্ণ এবং নির্মোহভাবে জ্ঞান অর্জনে মনোনিবেশ করো। তোমরাই হবে দেশের সবচেয়ে দক্ষ, সক্ষম এবং সামর্থ্যবান অমূল্য মানবসম্পদ।’

অনুষ্ঠানের শুরুতেই দুদক চেয়ারম্যান সততা সংঘের সদস্যদের শপথবাক্য পাঠ করান। তিনি সততা সংঘের সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, ‘ভবিষ্যতে দুদকের কার্যক্রম সততা সংঘের সদস্যদের মাধ্যমেই পরিচালিত হবে।’

সমাবেশে দুদক কমিশনার ড. নারিউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘কোচিং বাণিজ্য বন্ধে অসহায়ত্বের কোনও সুযোগ নেই।’

কমিশনার এ এফ এম আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘সততা শিক্ষা যদি আমরা পরিবার এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে দিতে পারি তা হলে অদূর ভবিষ্যতে দেশে দুর্নীতিবাজ তথা অসৎ মানুষ থাকবে না।

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- দুদক সচিব ড. মো. শামসুল আরেফিন, মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. জাফর ইকবাল প্রমুখ।

উল্লেখ্য, দুর্নীতি দমন কমিশন তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সততা, নিষ্ঠাবোধ ও চারিত্রিক দৃঢ়তা সৃষ্টি করা, দুর্নীতির বিরুদ্ধে তীব্র ঘৃণা সৃষ্টি করা এবং সর্বোপরি গণসচেতনতা গড়ে তোলার কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করার উদ্দেশে দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে দেশের স্কুল, মাদ্রাসা, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ইত্যাদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রায় ২৫ হাজার সততা সংঘ গঠন করেছে।