বুধবার গভীর রাতে শহরতলির ছিলিমপুর এলাকায় ডিবি পুলিশের সাথে এই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে বলে দাবি পুলিশের। গুলিবিদ্ধ শুভকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) ও কনস্টেবল রমজানকে পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হত্যা মামলা ছাড়াও শুভর বিরুদ্ধে সদর থানায় অস্ত্র আইনে অপর একটি মামলা হয়েছে।
তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির এসআই জুলহাস উদ্দিন জানান, শুভ সোনাতলা উপজেলার পাকুল্যা গ্রামের এমএ হান্নানের ছেলে। বুধবার রাত ২টার দিকে শহরতলির ছিলিমপুর পাওয়ার গ্রীড এলাকায় শুভসহ কয়েকজন সন্ত্রাসীর গোপন বৈঠকের খবরে সেখানে অভিযান চালায় পুলিশ। পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করা হলে আত্মরক্ষার্থে পুলিশ পাল্টা গুলি ছোঁড়ে। এতে শুভ পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে গেলেও তার সঙ্গীরা পালিয়ে যায়। গুলিবিনিময়ের ঘটনায় রমজান নামে পুলিশের এক কনস্টেবলও আহত হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। পরে ঘটনাস্থল থেকে গুলিভর্তি ম্যাগজিন ও একটি বিদেশি পিস্তলসহ শুভকে আটক করা হয়।
প্রসঙ্গত, পাসপোর্ট অফিস দালালমুক্ত ও সেবামুখি প্রতিষ্ঠান করায় শহর যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক সন্ত্রাসী পৌর কাউন্সিলর মোস্তাকিম রহমান এবং তার বাহিনীর লোকজন এডি সাহজাহান কবিরের উপর ক্ষিপ্ত হয়। ২৭ মার্চ অফিসে গিয়ে তাকে হুমকি দেয়া হয়। দুদিন পর ২৯ মার্চ দুপুরে এডি গ্রামের বাড়ি যাবার জন্য অটো রিকশায় শাকপালা বাসস্ট্যান্ডে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে শাজাহানপুর উপজেলার কৈগাড়ি এলাকায় বন বিভাগের কার্যালয়ের সামনে সন্ত্রাসীরা তার পথরোধ করে। তিনি আত্মরক্ষায় বন বিভাগের অফিসে ঢুকে পড়লে সন্ত্রাসীরা সেখানে গিয়ে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে থাকে। পাশের মসজিদ থেকে মুসল্লিরা বের হলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। এ ব্যাপারে অফিস সহকারি শাজেনুর আলম শাজাহানপুর থানায় মোস্তাকিমসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাত ৪-৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
সেদিন রাতেই পুলিশ শহরের মালগ্রাম থেকে রমজান আলীর ছেলে হাসান আলী, ঠনঠনিয়া হিন্দুপাড়ার আব্দুল কাদেরের ছেলে জীবন, একই এলাকার আবু তালেবের ছেলে রাসেল মিয়া ও মিলুকে গ্রেফতার করে। ৩০ মার্চ ভোরে ভারতে পালিয়ে যাবার প্রাক্কালে পুলিশ দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার হিলি সীমান্তের ডাঙ্গাপাড়ার সাতকুড়ি বাজার এলাকা থেকে মুলহোতা যুবলীগ সন্ত্রাসী কাউন্সিলর মোস্তাকিম রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্রসহ বিভিন্ন অভিযোগে চারটি মামলা রয়েছে। পরে এ মামলাটি ডিবি পুলিশকে দেয়া হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জুলহাস উদ্দিন প্রধান আসামী মোস্তাকিমকে ৫ দিন ও তার চার সহযোগিকে ৪ দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। বর্তমানে তারা বগুড়া কারাগারে আছেন। জিজ্ঞাসাবাদে তারা কী তথ্য দিয়েছেন সে সম্পর্কে তদন্তকারী কর্মকর্তা কিছু বলেননি।