লুপাস রোগ সম্পর্কে মানুষের স্পষ্ট ধারণা নেই

লুপাস আক্রান্ত এক নারী (ছবি সংগৃহীত)লুপাস হলো বিশ্বের অন্যতম রহস্যময় এক রোগ, যা মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্ষতি সাধন করতে পারে। এটি সম্পর্কে বাংলাদেশের মানুষের কোনও স্পষ্ট ধারণা নেই।এই রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিই রোগীদের সঠিক সহায়তা করতে পারে বলে মনে করেন চিকিৎসকরা।

তারা বলছেন, লুপাস একটি গ্রিক শব্দ যার অর্থ নেকড়ে। যেহেতু এই রোগের আক্রমণ অনেকটা নেকড়ের আক্রমণের মতো আকস্মিক, তাই একে লুপাস বলা হয়। আজ পর্যন্ত এই রোগের সঠিক কোনও কারণ সম্পূর্ণ জানা যায়নি।

লুপাস ফাউন্ডেশন অব আমেরিকার তথ্যানুযায়ী, বিশ্বে ৫০ লাখ লুপাস আক্রান্ত রোগী রয়েছেন। এ রোগ প্রতি এক লাখে ২০ থেকে ১৫০ জনের হতে পারে। শতকরা ৯০ ভাগ লুপাস রোগী কম বয়সী নারী। ছেলেদের এই রোগের প্রকোপ মেয়েদের চেয়ে অনেক কম।

এ পরিস্থিতিতে ১০ মে লুপাস দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে বিএসএমএমইউ এ র‌্যালি, সেমিনারসহ নানা আয়োজন করা হয়।  বিএসএমএমইউ এর রিউমাটোলজি বিভাগ, লুপাস ফাউন্ডেশন অফ বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ রিউমাটোলজি সোসাইটির যৌথ উদ্যোগে দিবসটি উপলক্ষে রোগীদের মাঝে সচেতনতামূলক লিফলেট, লুপাস গাইড বই বিতরণ করাসহ রোগীদের সঙ্গে সচেতনতামূলক মতবিনিময়ের আয়োজন করা হয়।

 বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ও রিউমাটোলজি সোসাইটির বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ডা. শামীম আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, লুপাসের সাধারণ উপসর্গগুলো হলো-চুল পড়া, মাথা ব্যথা, নাক ও গালের ওপর প্রজাপতির পাখার মত লাল চাকা, চরম ক্লান্তি বা অবসাদ, জ্বর, মুখে বা নাকে ঘা, গিরায় ব্যথা বা ফোলা, অস্বাভাবিক রক্ত জমাট, রক্তশূন্যতা, বুকের বা গভীর নিশ্বাসের সময় ব্যাথা, রোদ বা আলোয় শরীরের চামড়ায় প্রভাব বা জ্বালাপোড়া, ঠাণ্ডায় আঙ্গুল সাদা বা নীলাভ হয়ে যাওয়া এবং হাত, পা ও চোখের চারপাশে ফোলা ইত্যাদি।

তিনি বলেন, লুপাস সম্পর্কে বাংলাদেশে মানুষের মধ্যে সুষ্পষ্ট ধারণা নেই। ফলে এ রোগ নিরূপিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রোগী, পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী ও সমাজ নিজেদের মতো করে এ রোগের খারাপ পরিণতি নিয়ে দুঃশ্চিন্তা ও অপব্যাখ্যা করতে থাকে, যা অনেকক্ষেত্রে ভুল বোঝাবুঝি ও কুসংস্কারে ভরা।

বিএসএমএমইউ এর প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ  বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এই রোগ হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। মানুষের বিভিন্ন অঙ্গ আক্রান্ত হতে পারে। ব্রেন, হার্ট, কিডনি, চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এটা ওষুধ খেলে সুস্থ থাকবে, না খেলে বাড়তে থাকবে। তিনি আরও বলেন, বিএসএমএমইউতে লুপাস ক্লিনিক আছে, সপ্তাহের একদিন রোগী দেখা হয় এখানে।