‘খুলনা সিটি করপোরেশনে অস্বচ্ছ ও ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনের দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে’

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সংবাদ সম্মেলনদেশে কয়েকটি ভালো নির্বাচনের পর খুলনা সিটি করপোরেশনে একটি অস্বচ্ছ ও ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনের দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে বলে মনে করে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)।

মঙ্গলবার (২২ মে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ‘বিজয়ীদের তথ্য উপস্থাপন ও সুজনের দৃষ্টিতে নির্বাচন’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করে সুজন।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সর্বশেষ তিনটি সিটি নির্বাচন অর্থাৎ নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা ও রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সঙ্গে তুলনা করলে বলা যায়— কয়েকটি ভালো নির্বাচনের পর খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটি অস্বচ্ছ ও ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনের দৃষ্টান্ত স্থাপিত হলো।

এ সময় নির্বাচনের চিত্র তুলে ধরে বলা হয়, কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনেক ভোটার ভোট দিতে পারেননি। কোনও কোনও কেন্দ্রে প্রতীকে সিল ওদেয়ার ঘটনা ঘটেছে। উল্টোদিকে সিল-স্বাক্ষরবিহীন ব্যালটকেও বৈধ ভোট হিসেবে গণনা করা হয়েছে। একই সঙ্গে পুরোনির্বাচন প্রক্রিয়া স্বচ্ছ, কারসাজিমুক্ত ও বিশ্বাসযোগ্য ছিল না।

নির্বাচন দৃশ্যত বড় কোনও ধরনের অঘটন ও সহিংসতা ছাড়া অনুষ্ঠিত হলেও স্বচ্ছতা ও সুষ্ঠুতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।  কেন না, অনেক ভোট কেন্দ্রে বিরোধী দলের পোলিং এজেন্ট না থাকা, কেন্দ্র দখল, জাল ভোট দেওয়া, কেন্দ্রের সামনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর কর্মীদের জটলা সৃষ্টি করে প্রতিবন্ধকতা তৈরি, ভোটের আগেই বিরোধী দলের প্রার্থী সমর্থকদের গ্রেফতার ও হয়রানি করা, রিটার্নিং অফিসারের ওপর যুগ্ম সচিব পদ মর্যাদার একজন কর্মকর্তাকে সহায়তাকারী হিসেবে নিয়োগ করা, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তার ওপর চড়াও হওয়া ইত্যাদি ঘটনাবলী এ নির্বাচনকে প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের ভূমিকার বিষয়ে সুজন মনে করে, কমিশনের প্রস্তুতি ভালো ছিল বলা হলেও এক পর্যায়ে রিটার্নিং অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে। পরে তাকে সহায়তার জন্য যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজনকে খুলনায় পাঠানো হয়, যা নজিরবিহীন। একই সঙ্গে এই সিদ্ধান্ত যৌক্তিক ও আইন সম্মত কিনা, তা নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন রয়েছে। এর মাধ্যমে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলা হয়েছে।

সুজনের সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খানের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন— সুজনের সাধারণ সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, নির্বাহী সদস্য ড. তোফায়েল আহমেদ, সৈয়দ আবুল মকসুদ। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার।