টঙ্গিতে ‘বন্দুকযুদ্ধে’র ঘটনায় পুলিশের তদন্ত কমিটি

পুলিশ হেফাজতে রেজাউল ইসলাম রনিগাজীপুরের টঙ্গীতে রবিবার (২০ মে) দিবাগত রাতে রেজাউল ইসলাম রনির (২৮) ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হওয়ার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ঢাকা রেঞ্জ পুলিশ। রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (অ্যাডমিন অ্যান্ড ফিন্যান্স) মো. আনোয়ার হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে আগামী সাত দিনের মধ্যে মতামতসহ প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

পুলিশ সদর দফতর সূত্র জানায়, রেজাউল ইসলাম রনি ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হওয়ার পর তার মা পারভীন বেগম সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, ‘পুলিশ টাকা নিয়েও রনিকে ক্রসফায়ারে দিয়েছে।’ বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ খবর প্রকাশিত হওয়ার পর পুলিশ সদর দফতর থেকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন ঢাকা রেঞ্জের (অপরাধ) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আক্তার হোসেন ও গাজীপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত অভিযোগ বিশ্লেষণ, প্রকাশিত সংবাদে বর্ণিত অভিযোগের বিষয়ে পুলিশ সদস্যদের সম্পৃক্ততা ও দায়-দায়িত্ব নিরূপণসহ প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটিকে বলা হয়েছে।

ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গণমাধ্যমে অভিযোগ দেখার পর আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তারা তদন্ত করে এ বিষয়ে মতামত দেবেন। মতামত দেওয়ার পর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

প্রসঙ্গত, রেজাউল ইসলাম রনির মৃত্যুর পর সাংবাদিকদের কাছে তার মা পারভীন বেগম বলেছেন, টাকা নিয়েও পুলিশ তার ছেলেকে ক্রসফায়ারে দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘গত শনিবার দুপুর ২টার দিকে টঙ্গীর এরশাদনগরের বটতলা এলাকা থেকে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ রনিকে তুলে নিয়ে যায়। রবিবার দুপুর ১২টার দিকে রনিকে খুঁজতে গাজীপুর শহরের ডিবি কার্যালয়ে যাই। সে সময় একটি সাদা কাগজে আমার সই নেওয়া হয় এবং তিন লাখ টাকা রেখে রনিকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। ডিবি কার্যালয় থেকে বের হওয়ার পর পুলিশের মূল কার্যালয়ের সামনে থেকে টঙ্গী থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু বকর সিদ্দিক রনিকে আবারও আটক করেন। তাকে পুলিশের গাড়িতে তুলে টঙ্গী থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে ছাড়িয়ে আনতে গেলে পুলিশ টাকা দাবি করে। সোমবার সকালে রনি ছেড়ে দেওয়ার জন্য তার বাবা থানা পুলিশকে পাঁচ লাখ টাকা দেন। এরপর তিনি (রনির বাবা) বাড়ি ফিরে আসার পর আমরা জানতে পারি ছেলে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছে।